মেয়েদের মুখের ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ১৬টি ঘরোয়া উপায়
মেয়েদের মুখের ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ১৬টি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনি অনেক
খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু এর সঠিক কোন উত্তর পাননি। আজ আমি মুখের দাগ দূর করতে
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
এখানে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেয়েদের মুখের কালো দাগ দূর করার ক্রিম সহ
অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মেয়েদের মুখের ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ১৬টি ঘরোয়া উপায়
মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো মুখ। মুখ হচ্ছে মানুষের শরীরের একটি
সৌন্দর্যের প্রতীক। আর সেই অঙ্গে যদি দাগ পরে তাহলে বিষয়টা কেমন হয়। বিভিন্ন
কারণে মুখে দাগ পড়তে পারে। প্রখর রোদ, ধুলো ময়লা ও বিভিন্ন দূষণের কারণে মুখে
ত্বকে দেখা দেয় পিগমেন্টেশন সমস্যা। আর এ সমস্যা ব্রণ বা অন্য কোন রোগের
কারণেও হতে পারে। ।
ব্রণের দাগ হোক বা অন্য কারণে হওয়া দাগ, আপনার সুন্দর চেহারায় কালো দাগ মোটেও
মানানসই নয়। কুৎসিত কালো দাগ যে কোন সুন্দর চেহারাকেও মলিন করে দেয়। অনেক ক্রিম
মেখে, পার্লারে ট্রিটমেন্ট করিয়েও কাজ হচ্ছে না? চলুন এবার মূল বিষয়ে মনোযোগ
দেয়া যাক। এখন আমি মেয়েদের মুখের ত্বকের কালো দাগ দূর করতে ১৬টি
ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আরোচনা করবো।
লেবুর রস মুখে লাগিয়ে দাগ সহজেই দূর করা যায়
লেবু মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই একটা কার্যকরী উপাদান। এতে রয়েছে
সাইট্রিক এসিড এবং ভিটামিন সি। এই সাইট্রিক এসিড প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে
দারুণ কার্যকরী। মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে পাতি লেবু বেশ কার্যকর। একটি
বাটিতে লেবুর রস নিয়ে পরিষ্কার তুলে দিয়ে রসে ভিজিয়ে দাগের উপর লাগাতে
হবে।
যদি ত্বক বেশি সেন্সিটিভ হয় তাহলে তার সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে
নেওয়া যেতে পারে। লেবুর রসের সঙ্গে পরিমাণমত মধু মিশিয়ে নিলেও ভালো কাজ
করে। আপনি লেবুর রস মুখে লাগান এবং হালকা শুকিয়ে এলে ৫ মিনিট মুখে ম্যাসাজ
করুন। তারপর আরও ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ দিন একবার করলে মুখের
দাগ সহজে দূর হয়ে যাবে।
লেবুর রস এবং মধু পেস্ট: লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই
পেস্টটি কালো দাগের উপর লাগান এবং ১৫-২০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর কুসুম
গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন, যা ত্বকের
মৃত কোষ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে এবং কালো দাগ কমাতে সাহায্য করে।
কমলালেবুর খোসা স্ক্রাব হিসাবে অনেক ভালো
কমলালেবুর খোসা মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকরী। কমলালেবুর খোসায়
রয়েছে সাইট্রিক এসিড এবং ভিটামিন সি। ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকর।
কমলালেবুর খোসা প্রথমে পরিষ্কার করে নিয়ে রোদে শুকিয়ে তা গুড়ো করে স্ক্রাব
তৈরি করে নিতে হবে।
এই স্ক্রাব ত্বকে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এই স্ক্রাবের সাথে যদি
কিছুটা লেবুর রস, দুধ ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে এর কার্যকরী ফলাফল পাওয়া
যায়। এ মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। মিশ্রণটি যদি দিনে
একবার ব্যবহার করেন তাহলে ত্বকের দাগ সব দূর হওয়ার সঙ্গে ত্বক কোমল উজ্জ্বল
হবে।
আলুর রসে প্রাকৃতিক ব্লিচিং আছে যা দাগ দূর করতে সাহায্য করে
মুখের দাগ দূর করার জন্য আলুর রস একটি সহায়ক উপায় হতে পারে। আলুতে
ক্যাটেকোলেজ নামক একধরনের উপাদান থাকে, যা ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং রোদে পোড়া
ভাব দূর করতে সাহায্য করে1। আপনি আলুর রস একটু মোটা করে টুকরো করে নিতে
পারেন, এবং টুকরোগুলো মুখে লাগাতে পারেন। টুকরোগুলো সরাসরি পানিতে না ধুয়ে
আলু কাটার আগেই ধুয়ে নেওয়া ভালো।
আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের যত্ন ও দৈনিক খাদ্য তালিকা
এবার হালকা ভেজা ত্বকে আলুর টুকরোগুলো চক্রাকারে ঘষতে হবে। মনে রাখতে হবে,
খুব জোরে ঘষা যাবে না। এক মাস প্রতিদিন দুবার এ পদ্ধতিতে আলু ব্যবহার করলে
দাগছোপ চলে যাবে। মাঝেমধ্যে এর সঙ্গে লেবুর রসও ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে
সরাসরি মাঠের আলু ব্যবহার করতে পারলে দ্রুত কাজ হবে। পাঁচ দিনেই দূর হবে
মুখের দাগ।
অ্যালোভেরা দিয়ে মাস্ক ব্যাবহার করা যায়
অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই কার্যকর। অ্যালোভেরা
নানা ভিটামিন ও খনিজের উৎস। এটিতে প্রায় ২০ ধরনের খনিজ উপাদান রয়েছে।
আপনি অ্যালোভেরা সাথে দুধ, মসুর ডালের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করতে
পারেন। ত্বকের র্যাশ, চুলকানি, রোদে পড়া দাগ দূর করে অ্যালোভেরা জেল।
এই জেল ত্বকে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে এবং বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।
দুধ ত্বক দাগহীন করতে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে
কাঁচা দুধ মুখের ত্বকের জন্য উপকারী। কারণ কাঁচা দুধে রয়েছে ভিটামিন-বি১২,
ভিটামিন-বি৬, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি২ এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন; যা ত্বকের
কোষকে পুনরায় সতেজ করতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক হয় পূর্বের তুলনায় ফর্সা,
মসৃণ ও কোমল। কাঁচা দুধ, মুলতানি মাটি-বেসনের প্যাক। এই প্যাকটি ২০ মিনিটের
জন্য মুখে লাগিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন
ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
টমেটো ত্বকের দাগ দূর কতে সহায়ক
টমেটো ত্বকের উজ্জ্বল করতে ও দাগ দূর করতে টমেটোর শাঁস ও এক চা চামচ তাজা
মিন্ট বাটার সঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখুন। শুকিয়ে যাওয়ার পর পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন । টমেটোতে লাইসোপিন নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকে, যা ত্বকের বিভিন্ন দাগ, বলিরেখা এবং শুষ্কভাব দূর করে ত্বক মসৃণ করে।
এছাড়াও টমেটোতে ত্বকের জন্য আরো পুষ্টি উপাদান আছে যা নিম্নে উল্লেক করা
হলঃ
- লাইসোপিনঃ টমেটোতে লাইসোপিন নামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের বিভিন্ন দাগ, বলিরেখা এবং শুষ্কভাব দূর করে ত্বক মসৃণ করে।
- ভিটামিন সিঃ টমেটো ভিটামিন সির এক উৎস, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বানানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন সি ত্বকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
- পটাশিয়ামঃ টমেটো পটাশিয়ামের এক উৎস, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বানানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পটাশিয়াম ত্বকের স্বাস্থ্য বানানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
- আলোভেরাঃ টমেটোর সাথে আলোভেরা মিশিয়ে মুখে মাখলে ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং দাগ দূর হয়।
- মিন্ট পাতাঃ টমেটোর শাঁস ও এক চা চামচ তাজা মিন্ট বাটার সঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখলে ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং দাগ দূর হয়।
গোলাপ জল ঠোঁটে লাগিয়ে রাখলে ঠোঁটের কালচে ভাবও দূর হয়
গোলাপ জল ত্বকের জন্য অনেকটি উপকারিতা রেখে থাকে। এটি ত্বকের জ্বালা
প্রশমিত করতে বা লালভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। আমি কিছু উপায় উল্লেখ
করতে পারি, যা আপনার ঠোঁটের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করতে পারেঃ
- গোলাপ জল ত্বকের জন্য একটি উজ্জ্বল, হাইড্রেটেড স্কিন প্রদান করে। এটি ত্বকের লালভাব দূর করতে সাহায্য করে।
- ঠোঁটের কালো দাগ দূর করতে আপনি গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনাকে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে গোলাপ জল ঘষতে হবে এবং পরদিন সকালে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মুখের দাগ দূর করার জন্য চালের পানি একটি সহায়ক উপায় হতে পারে। চালের
পানিতে অনেক উপকারী উপাদান থাকে, যা ত্বকের সৌন্দর্য ও কোমলতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে। চালের পানি ব্রণের জন্য খুবই কার্যকরী। আপনি এই চালের পানি
তৈরির ৫ দিন পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে এটি ব্যবহার করতে পারেন। চালের পানি দিয়ে
খুশকি দূর করতে চালের পানি ব্যবহার করা উচিত। এতে শুধু মাথায় চুলকানি হয়
না, অনেক বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ও পড়তে সাহায্য করে।
বেসন ও হলুদের মিশ্রণে ত্বকের দাগ দূর হয়
মুখের দাগ দূর করতে হলুদ একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা খুবই উপকারী। এটি ত্বকের
অ্যান্টি-এজিং ফ্যাক্টর হিসেবেও ভালো কাজ করে। ডার্ক স্পট, ফাইন লাইনস বা
বলিরেখার মতো সমস্যা দূর করতেও এই প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে।
আপনি হলুদ ব্যবহার করে নিম্নলিখিত উপায়ে এটি লাগাতে পারেনঃ
- দই ও বেসনের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগিয়ে নিয়ে শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
- শীতকালে মুখ ধোয়ার জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন।
- মিশ্রণটি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
কালো দাগের জন্য আপেল সিডার ভিনেগার
আপেল সিডার ভিনেগার হচ্ছে এক ধরনের ভিনেগার যা আপেলের রস থেকে তৈরি করা হয়।
এটি সালাদের ড্রেসিং, ফুড প্রিজারভেটিভস, চাটনি এবং অন্যান্য উপায়ে ব্যবহৃত
হয়। আপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে মধু মিশানো হয় এবং এটি ত্বকের ব্রণের দাগ
দূর করতে সাহায্য করে। আপনি এটি ব্রণের দাগে লাগাতে পারেন, তা ১৫ মিনিট
অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার
করলে ভাল ফলাফল পেতে পারেন।
আপেল সিডার ভিনেগার একটি ব্যবহারিক উপাদান যা আপনি অন্যান্য উপায়ে ব্যবহার
করতে পারেনঃ
- ব্রণ দাগ দূর করতে: আপেল সিডার ভিনেগার ব্রণের দাগ দূর করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি এটি ব্রণের দাগে লাগাতে পারেন, তা ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে ভাল ফলাফল পেতে পারেন।
- সালাদের ড্রেসিং হিসেবে: আপেল সিডার ভিনেগার সালাদের ড্রেসিং হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সালাদে একটি স্বাদিষ্ট ফ্লেভার যোগ করতে সাহায্য করতে পারে।
- ফুড প্রিজারভেটিভস হিসেবে: আপেল সিডার ভিনেগার ফুড প্রিজারভেটিভস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি মসলা মিশানো ফুডের স্বাদ বা ফ্লেভার বা মিষ্টি স্বাদ যোগ করতে সাহায্য করতে পারে।
কালো দাগের জন্য চন্দন
চন্দন এমন একটি উপাদান যা অধিকাংশ কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মানুষের
ত্বকে ব্রণ হলে সে দাগ অনেক সময় চলে যায় কিন্তু সঠিক সময় ব্যবস্থা না
নিলে তা স্থায়ী হয়ে বসে যেতে পারে। আর তাই এ ধরনের দাগ সব দূর করার জন্য
আমরা চন্দন ব্যবহার করতে পারি। চন্দন ব্যবহারে আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে
সাহায্য করে
চন্দন ব্যবহারে মুখে ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে এবং ত্বকে দাগ থেকে রক্ষা
করে। চন্দন ব্যবহারের জন্য প্রথমে আমাদেরকে দুই টেবিল চামচ চন্দনের গুড়া
এবং কিছুটা গোলাপ জল মিশিয়ে নিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। মিশ্রণটি
তৈরি হয়ে গেলে আমরা তা মুখের ত্বকে লাগিয়ে নেব। লাগানোর আধাঘন্টা রেখে তা
ধুয়ে ফেলতে হবে।
পাতিলেবুর রসে চন্দনগুঁড়ো মিশিয়ে মুখে লাগান। এরপর ১০ মিনিট রাখুন। তারপর
মুখ ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে মুছে এই মিশ্রণটি লাগান ভালো করে। হালকা শুকিয়ে এলে
৫ মিনিট মুখে ম্যাসাজ করুন এবং আরও ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩
দিন একবার করলে মুখের দাগ সহজে দূর হয়ে যাবে।
এভাবে আমাদেরকে সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করা যেতে পারে এর বেশি
ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে যদি আমরা চন্দনের মিশ্রণটি ব্যবহার করি
তাহলে আমাদের মুখের ত্বকের দাগ সব দূর হয়ে যাবে এবং মুখের উজ্জ্বলতা
বৃদ্ধি পাবে।
কালো দাগের জন্য পেঁপে
মুখের কালো দাগ দূর করতে পেঁপে একটি উপায় হিসাবে প্রচুর ব্যবহার হয়।
পেঁপের রসের মাধ্যমে মুখের কালো দাগ দূর করা যেতে পারে1। আপনি পেঁপের
রস ব্যবহার করতে পারেন নিম্নলিখিত পদ্ধতিতেঃ
পেঁপের রসঃ লেমনে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক অ্যাসিড মুখের কালো
দাগ দূর করতে সাহায্য করতে পারে। আপনি লেমনের রস মুখে লাগাতে পারেন।
পেঁপে মুখে লাগানো খুবই সহজ। নিচে কিছু পদক্ষেপ দেওয়া হলোঃ
পেঁপের রস মুখে লাগানো একটি উপায় যা কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করতে
পারে। পেঁপের রসে অনেক উপকারিতা রয়েছে, যেমন ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত
করা, কালো দাগ দূর করা এবং ত্বকের সান ড্যামেজ ঠিক করা।
- পেঁপে কেটে রস বের করুন।
- মুখে কালো দাগে লাগান।
- ১৫ মিনিট পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই উপায়ের যে কোনো একটি সপ্তাহে পরপর তিন দিন করে দেখুন, তাহলে বুঝতে
পারবেন এটা ত্বকের উজ্জলতা কতটা বৃদ্ধি করে।
ওটমিল ত্বকে লাগিয়ে দাগ দূর করা
ওটমিল মুখের কালো দাগ দূর করার জন্য কার্যকরী উপাদান। আধা কাপ মতো
ওটমিল নিয়ে পিষে নিন এবং লেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাব করুন। ১৫ মিনিট মতো
রেখে উষ্ণ গরম জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহে তিন দিন কররে আপনার
ত্বকের কালো দাগ দূর হয়ে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে।
মধু মুখে লাগিয়ে দাগ দূর করে
মধু ত্বকের কালো দাগ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।মধু নিয়ম
করে মুখে লগালে ত্বকের সমস্যা দূর হবে।
- প্রথমে মুখ পরিষ্কার করুন।
- একটি ক্লিন স্পাটুল বা আপনার আঙ্গুল ব্যবহার করে মধু নিন।
- মুখে মধু লাগানোর জন্য সম্ভাব্য স্থানে মধু প্রয়োগ করুন, যেমন কালো দাগ বা অন্য সমস্যা আছে।
- মধু মুখে লাগানোর পর কিছু মিনিট অপেক্ষা করুন।
- পরে মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মধুর স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য এটি একটি সহজ উপায়। তবে, যদি কোনো
সমস্যা অথবা অসুবিধা অনুভব করেন, তবে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
মুলতানি মাটি ও মধুর মিশ্রণ ত্বকের দাগ দূর করে
ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। শুষ্ক বা সেনসিটিভ ত্বক
হয়, তাহলে পাকা লেবুর রসের সাথে মুলতানি মাটি ও মধু মিশিয়ে নিন। এই
মিশ্রণ ধোয়া মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত
ব্যবহারে ত্বকের কালো দাগ মিলিয়ে যাবে।
বাটার মিল্ক দাগ দূর করে ত্বককে করে লাবণ্যময়
বাটার মিল্কে থাকে প্রচুর ল্যাকটিক অ্যাসিড, যা ত্বকের মরা কোষ তোলে সহজেই
ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকে হালকা করে অনেকটাই এবং ত্বকের
উজ্জলতা বৃদ্ধি করে, ত্বককে করে লাবণ্যময়।
মেয়েদের মুখের কালো দাগ দূর করার ক্রিম
মুখের ব্রণ ও কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। তবে,
কোন ক্রিমটি আপনার জন্য ভালো হবে তা নির্ভর করে আপনার ত্বকের ধরণ, দাগের
তীব্রতা এবং আপনার পছন্দের উপর। এই ক্রিমগুলি ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে
সাহায্য করতে পারেঃ
- গার্নিয়ার একনো ফাইট সিক্স ইন ওয়ান পিম্পল ক্লিয়ারিং ফেস ওয়াশঃ এই ফেস ওয়াশে পুদিনা ও লেবুর নির্যাস থাকে, যা ত্বক গভীর থেকে পরিষ্কার করে এবং ব্রণ থেকে সহজেই মুক্তি দেয়।
- ম্যানকাইন্ড অ্যাকনেস্টার রিমুভাল জেলঃ এই জেলে আছে ক্লিন্ড্যামাইকিন নিকোটিনামিড, যা ত্বকের বিভিন্ন ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে এবং ব্রণ থেকে খুব সহজেই মুক্তি দেয়।
- ডার্মাডিকস অ্যান্টি-একনি সিরামঃ এই সিরাম আপনার স্কিনের ব্রণ, ব্রণের দাগ, স্কিনের বিবর্ণতা, চুলকানি, জ্বালাপোড়া এবং লালচেভাব দূর করতে সক্ষম।
- নিভিয়া হোয়াইটেনিং অয়েল কন্ট্রোল ময়েশ্চারাইজার ফর ম্যানঃ এই ময়েশ্চারাইজার ত্বকের তৈলাক্তভাব দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- ওয়ান নাইট একনি প্যাচঃ One Night Acne Solution Patch. রাতের বেলা ঘুমানোর আগে প্যাচটি মুখের আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। পরদিন সকালেই সব ব্রণ গায়েব। এতে থাকা Magnesium, Magnesium Oxide ও Hydrocolloid এর কম্বিনেশন জাদুর মতোই এক রাতের মধ্যে ব্রণ দূর করে। স্কিনের জ্বালাপোড়া ও অয়েলি ভাব দূর করে এবং ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে।
- দ্যা বডি শপ টি ট্রি স্কিন ক্লিয়ারিং ফেস ওয়াশঃ এই ফেস ওয়াশে প্রাকৃতিক চা পাতার নির্যাস থাকে, যা ত্বককে পরিষ্কার করে এবং ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- নোভাক্লিয়ার একনি ক্রিমঃ অয়েলি, কম্বিনেশন আর একনি প্রোন স্কিনে ব্রণের প্রবণতা থাকে সবচাইতে বেশি। এই ক্রিমের একটিভ উপাদান হিসেবে আছে স্যালিসাইলিক এসিড, প্যানথেনল এবং স্কুয়ালেন। যা আপনার স্কিনের ব্রণ, ইম্পিউরিটিস, মেকআপ ও ময়লা দূর করে।
- নরম্যাকনে একনি স্পট ট্রিটমেন্টঃ এই ক্রিমে স্কিনের মৃত জমে থাকা কোষগুলো সরে যায় এবং স্কিনের বন্ধ পোরসের মুখ খুলে দেয়। ফলে স্কিন হয় দাগমুক্ত, মসৃণ ও উজ্জ্বল।
সমস্যা মাত্রাতিরিক্ত হলে ইউটিউব, গুগলে সার্চ করে উল্টাপাল্টা
ক্রিম,ফেসওয়াস ব্যবহার না করে ভালো ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
এই ক্রিমগুলি ব্যবহার করার আগে প্রয়োজনীয় নিয়ম ও দিক সম্পর্কে একজন স্কীন
বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে হবে।
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণের দাগ দূর করার উপায়
মানুষের সৌন্দর্যের প্রধান অঙ্গ হল মুখ। আর সেই মুখে যদি কালো দাগ পড়ে তবে
তার সৌন্দর্য অনেকটাই কমে যায়। যা কারোরই কাম্য নয়। তৈলাক্ত ত্বকের
ব্রণ ও তেলতেলে ভাব দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় আছে। নিচে কিছু
প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে তৈরি ফেসপ্যাকের উপায় দেওয়া হলোঃ
বেসন ফেসপ্যাকঃ
- ২ চামচ বেসন ও ৪ চামচ দুধ একসঙ্গে ভালো করে গুলিয়ে নিন।
- এই পেস্ট মুখে ও গলায় লাগান।
- ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করুন।
ডিম, শসা ও পুদিনার প্যাকঃ
- একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে শসার রস ও পুদিনাপাতার পেস্ট মিশিয়ে ত্বকে লাগান।
- শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
- পুদিনার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণমুক্ত রাখবে ত্বক।
কমলার ফেসপ্যাকঃ
- ২ চামচ কমলালেবুর খোসার গুঁড়া, ৪ চামচ দুধ, ১ চামচ কাঁচা হলুদবাটা একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান।
- ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- এটা শুধু অতিরিক্ত তেলই কন্ট্রোল করবে না, ত্বককে করে তুলবে গ্লোয়িং।
- সপ্তাহে এক বা দুদিন করুন।
এই উপায়গুলি আপনার তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যাগুলি দূর করতে সাহায্য করবে।
লেখকের মন্তব্য
মুখ মানুষের সৌন্দর্যের প্রতিক। আর সেই মুখে যদি থাকে দাগ তাহলে কেমন হয়
বলুনতো। মুখের দাগকে দূর করতে আমরা কতই কিছু না করছি। তার পরেও যদি মুখ থাকে
সুন্দর। তবে আমি মনে করি মুখে যদি দাগ বা ছোবভাব দেখা দেয় তাহলে মুখের দাগ দূর
করতে ঘরোয়া ১৬টি সহজ উপায় গুলো মেনে চললে খুব সহজে মুখের ত্বককে সুন্দর রাখতে
পারবো।
এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের
গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইট
ফলো করতে থাকুন। কারণ আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে
থাকি। আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে আপনার
পরিচিত বন্ধু মহলে শেয়ার করে দিবেন।
aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url