ওজন কমানোর ১৫টি ঘরোয়া সহজ উপায়
ওজন কমানোর জন্য যুদ্ধ করছেন। কিন্তু কোনো কাজই হচ্ছে না? ওজন কমানোর উপায়
খুঁজছেন, পাচ্ছেন না? অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছে কমিয়েই ওজন কমানো সম্ভব।
আজ ওজন কমানোর ১৫টি ঘরোয়া সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করবো।
এছাড়াও প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় সহ বিভিন্ন বিষয় জানতে
আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্রঃ ওজন কমানোর ১৫টি ঘরোয়া সহজ উপায়
.
ওজন বাড়তে থাকলে দুশ্চিন্তার পরিমাণও বাড়তে থাকে। সুস্থতায় জরুরি সঠিক মাপের ওজন
ধরে রাখা। বাড়তি ওজন মানেই বাড়তি কিছু অসুখ-বিসুখের ভয়। খেতে-শুতে-বসতে সব সময়ই
ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়। নিজের ইচ্ছেমতো ওজন কমানোর চেষ্টা করতে উচিৎ নয়। কারণ
ভুলভাল ডায়েটে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হল ধীরে ধীরে
স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানো। ওজন কমানোর ১৫টি ঘরোয়া সহজ উপায় নিম্নে আলোচনা করা
হলোঃ
লেটুস পাতা
লেটুস পাতা ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি একটি নিম্ন ক্যালরি সহ শাকসবজি, যা
আপনার পেটে মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। লেটুস পাতা খাওয়া
সহজ এবং স্বাস্থ্যকর। আপনি এটি সালাদে, স্যুপে, স্যান্ডউইচে বা অন্য খাবারে যোগ
করতে পারেন। এছাড়া, লেটুস পাতা আপনার পেটে মেদ কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার ওজন
নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এটি আপনার খাবার তালিকায় যোগ করতে পারেন। আপনি লেটুস
পাতা সহ স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন এবং ওজন কমাতে সাহায্য পাবেন
মূলা
মূলা খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং আপনার শরীরের স্বাস্থ্য উন্নত করতে
সাহায্য করতে পারে। মূলা একটি পুষ্টিগুণযুক্ত সবজি। মূলা প্রায় ক্যালরি ছাড়াই পেট
ভরাতে সাহায্য করে। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। মূলা মধ্যে
জলীয় উপাদান এবং ফাইবারের পরিমাণ খুবই বেশি থাকে, যা শরীর থেকে বর্জ্য বের করে
দিতে সাহায্য করে। যার ফলে, যারা ওজন কমাতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য মূলা খুবই
কার্যকরি একটি উপাদান।
পালং শাক
পালংশাক খেলে আপনি অনেক স্বাস্থ্যকর উপকার পাবেন। এই শাকের পুষ্টিগুণ অনেক
গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার শরীরের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। পালংশাক গ্রহণে
ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং এর পাশাপাশি আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। যেমন- পালংশাকে
আয়রন ভালো মাত্রায় থাকে, যা আপনার হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে।
এটি আপনার রক্তে অকাল অন্ধত্ব থেকে চোখকে রক্ষা করে।পালংশাক আরথ্রাইটিস জন্য ভালো
হতে পারে। এটি চোখের ভেতর ও বাইরের অংশে পুষ্টি জোগায়।পালংশাক ত্বককে উজ্জ্বল করে
এবং বলিরেখা থেকে দূরে রাখে। এটি পেশী শক্তিশালী করে এবং শরীর শক্তিশালী করে।
পালংশাকের পুষ্টিগুণের উপর ভিত্তি করে এই শাক নিয়মিত খাওয়া সবার জন্য উপকারী।
আঙ্গুর
আঙ্গুর ফল খেতে অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু
ফল, যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। আঙ্গুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য জরুরী। এটি হজম শক্তি বৃদ্ধি
করে, কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে, কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে, চোখের
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে, ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে,
বার্ধক্য দূরে সরিয়ে দেয়, হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে, স্তন ক্যান্সার
নিরাময়ে সাহায্য করে, মাথা ব্যথা উপশম করে, রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে,
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সাহায্য করে, ত্বকের যত্নে সাহায্য করে, চুলের যত্নে সাহায্য
করে, অ্যাজমা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের
নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়া উচিত।
ফুলকপি
ফুলকপি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন C, ভিটামিন K, থায়ামিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ম্যাগনেশিয়াম, নিয়াসিন,
ফসফরাস, ভিটামিন B6, ফলেট, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা মানুষের
দেহে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম। ফুলকপি মস্তিষ্ক ভালো রাখার কাজ করে,
তাছাড়া ওজন কম করতে সাহায্য করে এবং সর্দি-কাশিসহ নানা রোগ প্রতিরোধ করে।
সতর্কতা: ফুলকপি খাওয়ার সময় সঠিক পরিমাণে খান, যাতে অতিরিক্ত ক্যালোরি না
প্রাপ্ত হয়।
বাঁধাকপি
ওজন কমাতে বাঁধাকপির স্যুপ একটি স্বাস্থ্যকর খাবার হতে পারে। এটি ক্যালরি কম এবং
পুরোপুরি প্রাকৃতিক। বাঁধাকপি স্যুপ তৈরি করতে বাঁধাকপি, পেয়াজ, লবণ, মরিচ,
লেবুর রস, এবং পানি ব্যবহার করা হয়। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
ব্রোকোলি
ব্রোকোলি ওজন কমাতে খুবই উপকারী একটি সবজি। এটি পুষ্টি, ভিটামিন, এবং খনিজ
উপাদানে সমৃদ্ধ, যা ওজন কমাতে সহায়ক। ব্রোকোলি হজম ক্রিয়া উন্নত করে এবং
ক্ষুধাভাব নিয়ন্ত্রণ করে। এটি আপনার ওজন কমানোর যাত্রায় একটি মজাদার উপায়। আঁশের
সমৃদ্ধি ও অন্যান্য উপাদানের জন্য ব্রোকোলি খেতে পারেন।
এটি পেট ভরা রাখে এবং অধিভোজনের ঝুঁকি কমায়। তাই নিয়মিত ব্রোকোলি খেতে পারেন
এবং ওজন দ্রুত কমাতে সহায়ক হতে পারে। আপনি ব্রোকোলি সিদ্ধ করে অল্প গোলমরিচ এবং
বিট নুন ছড়িয়ে খেতে পারেন, অথবা এটির তরকারি বানিয়ে খাতে পারেন। আপনি যে কোন পদে
ব্রোকোলি যুক্ত করে স্টার ফ্রাই তৈরি করতে পারেন, যা মজাদার স্বাস্থ্যকর এবং ওজন
কমাতে সাহায্য করবে।
মটরশুটি
মটরশুটি ওজন কমাতে একটি প্রাথমিক উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি চর্বি কম
এবং জটিল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফাইবারে অধিক - এগুলি সবই ওজন
ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মটরশুটিতে থাকা ফাইবার সামগ্রী
আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পূর্ণ বোধ করতে সাহায্য করে। সামগ্রিক ক্যালোরি গ্রহণ কমায়,
প্রোটিন পেশী তৈরি এবং মেরামত করতে সহায়তা করে।
বাদাম
বাদাম ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। বাদাম একটি পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার, যা
আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই খাবারে অনেক উপকারিতা
রয়েছে। যেমন-
- প্রোটিন ও ফাইবার: বাদামে প্রোটিন ও ফাইবার প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এটি আপনাকে দীর্ঘক্ষণ সাতে রাখতে সাহায্য করে এবং অল্প খাবারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে সাহায্য করে।
- মনোযোগ ও ডিটক্সিফিকেশন: বাদাম রাতে ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া সাহায্য করতে পারে এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। সুস্থ জীবনযাপনে বাদাম অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
আপেল
আপেল একটি স্বাস্থ্যকর ফল। এতে পানি, ভোজ্য আঁশ, ফাইবার, ভিটামিন সি, এবং খনিজ
রয়েছে। আপেল নিয়মিত খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এটি পেট ভরা রাখে
এবং প্রায় ২০০ ক্যালরি পর্যন্ত কম গ্রহণ করতে সাহায্য করে। আপেল খেতে সুস্বাদু
এবং স্বাস্থ্যকর, তাই নিয়মিত আপেল খাওয়া উচিত।
ইয়োগার্ট
ইয়োগার্ট একটি স্বাস্থ্যকর খাবার, যা ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি
নিম্নলিখিত উপাদান গুলি অধিক পরিমাণে ধারণ করে:
- প্রোটিনঃ ইয়োগার্ট প্রোটিনের এক ভাল উৎস। প্রোটিন আপনার পেটে ক্ষুধা বোধ করার সময় সাথে আপনাকে পুরো ফিট থাকতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- ক্যালসিয়ামঃ ইয়োগার্ট ক্যালসিয়ামের এক ভাল উৎস। ক্যালসিয়াম ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে, কারণ এটি পেটে মেদ জমানোর প্রতিরোধ করে।
- প্রোবায়টিক্সঃ ইয়োগার্টে প্রোবায়টিক্স রয়েছে, যা আপনার পাচনাতন্ত্র সঠিক করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়াও, ইয়োগার্ট স্বাদযুক্ত এবং স্বাস্থ্যকর, তাই নিয়মিত খাওয়া উচিত। আপনি এটি
অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন যা ওজন কমাতে সাহায্য করতে
পারে।
জাম্বুরা
জাম্বুরা একটি পুষ্টিকর ফল যা ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি সপ্তাহে ১ থেকে ২
পাউন্ড (০.৫ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১ কেজি) ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। জাম্বুরা
খেতে সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে অনন্য। প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরাতে থাকে ৩৮
কিলোক্যালরি, প্রোটিন ০.৫ গ্রাম, স্নেহ ০.৩ গ্রাম, শর্করা ৮.৫ গ্রাম, খাদ্য-আঁশ ১
গ্রাম, থায়ামিন ০.০৩৪ গ্রাম,
খনিজ লবণ ০.২০ গ্রাম, রিবোফ্লেভিন ০.০২৭ গ্রাম, নিয়াসিন ০.২২ গ্রাম, ভিটামিন
বি-২ ০.০৪ মিলি গ্রাম, ভিটামিন বি-৬ ০.০৩৬ গ্রাম, ভিটামিন সি ১০৫ মিলিগ্রাম,
ক্যারোটিন ১২০ মাইক্রো গ্রাম, আইরন ০.২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম,
পটাসিয়াম ২১৬ মিলিগ্রাম এবং সোডিয়াম ০১ মিলিগ্রাম থাকে। তাই প্রতিবার খাওয়ার
আগে অর্ধেক জাম্বুরা গ্রহণ বা এক গ্লাস জাম্বুরার রস পান করতে পারেন।
ডার্ক চকলেট
ডার্ক চকোলেট খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি অনেক লোকের ডায়েটে ওজন
কমানোর জন্য একটি ভাল বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ডার্ক চকোলেটে কম চিনি থাকে
এবং কোকোর ঘনত্ব বেশি থাকে, যা ওজন কমানোর সাথে জড়িত এবং চর্বি সঞ্চয় কমাতে
সাহায্য করে।
এটি আপনার মগজে সেরোটোনিন ও এন্ডোরফিনস নিঃসরণ করে, যা আপনাকে শান্ত ও নিশ্চিন্ত
রাখতে সাহায্য করে। আপনি মাত্র এক-দুই টুকরো ডার্ক চকোলেট খেলে আপনার প্রতিদিনের
খাবারের ১৬ শতাংশ ক্যালরি পূরণ করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভালো আঁশযুক্ত খাবার মনে
করা হয় ওটমিল ও ব্রকোলি, এবং মিষ্টিজাতীয় খাবারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অপশন হলো
ডার্ক চকলেট ।
পর্যাপ্ত পানি পান
পানি পান করা ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান
করা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। এই কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে আসা
যাকঃ
- প্রতিদিন গড়ে সর্বনিম্ন ৩ লিটার পানি পান করা প্রস্তাবিত হয়। এটি আপনাকে হাইড্রেটেড রাখে এবং আপনার ক্ষুধার্ত যন্ত্রণার অবসান ঘটায়, যা আপনার ওজন কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে।
- বিশুদ্ধ ও পরিমিত পানি পান করা আপনার শরীরের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
- জিরা পানি খাওয়া আপনাকে হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপকার করে।
- সকালে খালি পেটে গরম পানি পান করা অত্যন্ত উপকারী। এটি শরীরের পাকস্থলি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
লেবু পানি
ওজন কমাতে লেবুপানি একটি প্রচুরভাবে ব্যবহৃত পদ্ধতি। সকালে খালি পেটে লেবুপানি
পান করা অনেকের কাছে পরিচিত এবং জনপ্রিয়। লেবু ও পানি দুটো উপাদান আলাদাভাবে
শরীরের জন্য উপকারী। এটি পাকস্থলি ও অন্ত্রের অন্যান্য অংশ থেকে পাকরস তৈরিকে
ত্বরান্বিত করে এবং পেটফাঁপা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমিয়ে পেট পরিষ্কার রাখতে
সাহায্য করে।
ভারী খাবার খাওয়ার পর কোমল পানীয়র পরিবর্তে বেছে নিতে পারেন লেবুপানি। সকালে
লেবুপানি পান করার জন্য আপনি এক কাপ গরম পানির মধ্যে দুই চা–চামচ লেবুর রস এবং
একটু মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটি আপনার ক্যালরি কন্ট্রোল করতে সাহায্য করতে
পারে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরার ৪২টি স্বাস্থ্য উপকারিতার উপায়
আপনি সকালে নাস্তা করার অন্তত ৩০ মিনিট আগে লেবুপানি পান করতে পারেন, যা ক্যাফেইন
পানিশূন্যতা তৈরি করে এবং দিনে খাওয়া কম হতে সাহায্য করে। এটি শরীরের অতিরিক্ত
ক্যালরি প্রবেশ করতে পারে না। তবে, দিনে দুইবারের বেশি লেবুপানি পান করবেন না।
আপনি সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে পারেন এবং শরীরের চাহিদা অনুযায়ী গ্রহণ করতে
পারেন।
মনে রাখবেন, ওজন কমাতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি একটি
প্রফেশনাল ডায়েটিশিয়ানের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যেন আপনি সঠিক উপায়ে ওজন কমাতে
সাহায্য পান।
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি
প্রতিদিন ১ কেজি করে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় কি? ওজন কমানো একটি সম্ভাব্য কাজ,
কিন্তু এটি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। প্রতিদিন ১ কেজি ওজন
কমাতে আপনাকে নিয়মিত ডায়েট ফলো করতে হবে এবং দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে
হবে। এই কিছু উপায় মেনে চলতে পারেনঃ
- ব্যায়াম করুন: দ্রুত ওজন কমাতে আপনাকে নিয়মিত দৌড়াতে হবে, হাঁটতে হবে বা সাইকেল চালাতে হবে। হাই ইনটেনসিভ ইনটারভেল ট্রেনিং (Hiit) একটি কার্যকর ব্যায়াম পদ্ধতি যা দীর্ঘস্থায়ী ব্যায়ামের তুলনায় ওজন কমাতে বেশি কার্যকর।
- খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন: কম খান কিন্তু খাওয়া বন্ধ করা যাবেনা। আপনি চাইলে খুব সহজে আপনার ওজন কমাতে পারবেন। তবে, দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনাকে প্রোটিন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্যালোরি গণনা করা। আপনি ছোট প্লেটে খাবার খেতে পারেন এবং আস্তে আস্তে ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেতে হবে।
- ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে অনেক প্রকার পোষণীয় উপাদান থাকে, যেমন প্রোটিন, আন্দাজে ১৪০ ক্যালোরি এবং ফাইবার। এটি মনোব্যাধি সংক্রান্ত সমস্যাগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং মধুমেহ নির্বাহে সাহায্য করতে পারে। তবে, মাত্র সঠিক পরিমাণে খেতে হবে, কারণ এটি উচ্চ ক্যালোরি থাকতে পারে।
- ব্রোকলি, স্পিনাচ, গ্রেপস, ক্যাবেজ, কলিফ্লাওয়ার, লেটুস এবং আলমন্ড: এই সব সবজি এবং বাদাম প্রোটিন, ফাইবার এবং পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর খাবার। এগুলি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- লেবুর পানি: সকালে খালি পেটে লেবুর পানি পান করা স্বাস্থ্যকর এবং ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি আপনার পাচন প্রক্রিয়াকে সহায্য করতে পারে এবং আপনার শরীরের অস্তিত্বের প্রমাণ বাড়াতে পারে।
আপনার ডায়েটে এই খাবারগুলি যোগ করতে পারেন এবং সাথে সাথে আপনার স্বাস্থ্যকর
জীবনযাপন প্রণালী পরিবর্তন করতে পারেন। এছাড়াও আপনাকে আরো কিছু নিয়ম অনুসরন করতে
হবে-
- দুপুরের খাবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে খাবেন। খাবারের আধা ঘণ্টা আগে ২ গ্লাস পানি খাবেন।
- খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবান। অন্তত ২০ মিনিট সময় নিয়ে খাবেন।
- দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটবেন।
- আট ঘণ্টা গভীর ঘুম।
- সকালে খালি পেটে আর বিকেলে চিনি ছাড়া গ্রিন টি খাবেন।
খাবারের তালিকায় যেসব খাবার রাখা যাবেনা
শুধু খাবার খেয়ে ওজন কমানোর কথা ভাবলে হবে না । পাশাপাশি আপনাকে খাবারের
তালিকা থেকে কিছু খাবার বাদ দিতে হবে তবেই আপনার ওজন কমানো সম্ভাব। যে খাবার
গুলো বাদ দিতে হবে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- বার্গার
- চিপস
- ভাত, সাদা আটা–ময়দা
- চকলেট
- আইসক্রিম
- ফাস্ট ফুড
- সোডা
- চিনি, এমন ড্রিংক যেটাতে চিনি আছে
- অস্বাস্থ্যকর তেল, চর্বি
- কেক, ডোনাট
আপনি যদি চার সপ্তাহ খাবারগুলো না খেয়ে থাকতে পারেন, তাহলে আপনার শরীর ধীরে
ধীরে এসব খাবারের প্রতি ‘চাহিদা’ কমিয়ে দেবে। যতো কৌশলই থাকুক না কেনো
দিনশেষে ওজন কমাতে আপনাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে আপনার নিজের ইচ্ছে এবং
ধারাবাহিকতা। এই দুটো যত বেশি জিইয়ে থাকবে, ওজনও তত দ্রুত কমবে এবং আপনার
নিজের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। তাই ডায়েট, এক্সারসাইজ সবকিছুর সাথে নিজের মনের
যত্নটাও জরুরী।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি আপনি ওজন কমানোর ১৫টি ঘরোয়া সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই আপনি আপনার
বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে শেয়ার করে দিতে
পারেন। আজকের আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট
বক্সে জানিয়ে দিবেন। aminulit.com এর সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।
aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url