অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের পরিচয় জেনে নিই

 
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের পরিচয় সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? রাজনৈতকি পেক্ষাপটে এই বিষয়টি জানা খুব প্রয়োজন। তাই আজ আমি এই সম্পর্কে আলোচনা করবো।


এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা কে কোন মন্ত্রানালয়ে আছেন সে সম্পর্কে জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের পরিচয় জেনে নিই

.
বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার পতনের তিনদিন পর নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার পরে বঙ্গভবনে নতুন সরকারের উপদেষ্টারা শপথ নেন। সেখানে তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নাম আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন তিনি ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থান করছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে বৈঠক করে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা মণ্ডলীর বাকি সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়। নিম্নে তাদের সম্পর্কে তুলে ধরা হলোঃ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এবং চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। 


১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্যদূরীকরণে উদ্যোগী হন। পরে দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৬ সালে তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। 

এখন পর্যন্ত দারিদ্র্য দূরীকরণে ক্ষুদ্রঋণ বা সামাজিক ব্যবসার এই মডেল পৃথিবীর ৪০টির বেশি দেশে ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ধারণ করে চলেছে। এ ছাড়া পৃথিবীর ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার নামে ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ড. ইউনূসের চিন্তা, কাজ, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে গবেষণা করা হয়।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ 

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ একজন বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নবম গভর্নর এবং ২০২৪-এ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। তিনি পুরান ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে শিক্ষা শুরু করেন। তার পরে, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি পড়ে স্নাতক এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। 

তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন, যেগুলি মধ্যে ব্র্যাকে ডেপুটি নির্বাহী পরিচালক এবং ব্যাংক গভর্নর সহিত অন্যান্য মর্যাদাপ্রাপ্ত পদগুলি রয়েছে। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হিসেবে প্রাসঙ্গিক নিবন্ধ ও বই প্রকাশ করেছেন। নতুন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন।

এএফ হাসান আরিফ 

ড. এফ হাসান আরিফ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার শিক্ষাগত পাঠ্যক্রম কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে শুরু হয়েছে। তিনি ভারতের পশ্চিম বাংলার কলকাতা হাইকোর্ট থেকে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। 

এরপর ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং বাংলাদেশের সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এএফ হাসান আরিফ, বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ২০০৭-০৮ সালে ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।

মো. তৌহিদ হোসেন 

মোঃ তৌহিদ হোসেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন উপদেষ্টা ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন1। তিনি ১৯৫৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন1। তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নের অভাবের জন্য ভারতের সদিচ্ছার অভাবকে দায়ী করেছেন1। এছাড়া পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট হিসেবেও মি. হোসেনের পরিচিতি রয়েছে।

আদিলুর রহমান খান

আদিলুর রহমান খান, ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২ সালে মুন্সীগঞ্জ, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, মানবাধিকার সংস্থা “Odhikar” এর প্রতিষ্ঠাতা, এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়েছেন এবং 


লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি মানবাধিকার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন এবং ২০১৪ সালে তাকে গুয়াংজু মানবাধিকার পুরস্কার এবং রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
আদিলুর রহমান খানকে ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযানে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার মামলায় তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। তবে এখন তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং বাংলাদেশের সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ড. আসিফ নজরুল

ডা. আসিফ নজরুল একজন বাংলাদেশি লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ১৯৯১ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন। আন্তর্জাতিক আইনে পিএইচডি করেন লন্ডন থেকে। এরপর জার্মানি ও ইংল্যান্ডে কিছুদিন কাজ করেছেন পোস্টডক্টরাল ফেলো হিসেবে।


সাংবাদিক হিসেবে একসময় খ্যাতি অর্জন করেন। বর্তমানে কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে বহুল পরিচিত। দীর্ঘ বিরতির পর কয়েক বছর ধরে আবার সৃজনশীল লেখালেখি করছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময় অধ্যাপক নজরুলকে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছে। 
এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা সরে যাওয়ার পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সমদস্যদের ডেকে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান যে বৈঠকটি করেছিলেন, সেখানেও তাকে রাখা হয়েছিল।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান 

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের পৈত্রিক নিবাস হবিগঞ্জে। তবে তিনি ১৯৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি  ঢাকার ধানমন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সৈয়দ মহিবুল হাসান ও সুরাইয়া হাসান দম্পতির একমাত্র কন্যা ও ছোট সন্তান।  রিজওয়ানা হাসান ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর হলিক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। 


বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রথমে লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হলেও আইনের প্রতি আগ্রহ থেকে পরে বিভাগ পরিবর্তন করে আইন বিভাগে ভর্তি হন। এবং সেখান থেকে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে এলএলএম সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশের বাইরে বেশ কয়েকটি ফেলোশিপ কোর্স সম্পন্ন করেছেন তিনি। 

২০০৭ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইজেনহাওয়ার ফেলোশিপও করেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার প্রধান নির্বাহী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান  পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বেশ সরব। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় হামলারও শিকার হয়েছেন। 
পরিবেশ অঙ্গণে সাহসি ভূমিকার জন্য সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে 'পরিবেশের নোবেল' খ্যাত "গোল্ডম্যান এনভায়রনমেন্টাল প্রাইজ", বিশ্বখ্যাত টাইম সাময়িকীর "হিরোজ অফ এনভায়রনমেন্ট" খেতাব। 

পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০১২ সালে ‘রামোন ম্যাগসেসে’ পুরস্কার পান করেন মিজ হাসান। এছাড়াও তিনি ২০০৮  সালে নেপালভিত্তিক ক্রিয়েটিভ স্টেটমেন্টস এ্যান্ড সাউথ এশিয়া পার্টনারশিপ প্রদত্ত "সিলেব্রেটিং ওমেনহুড এওয়ার্ড"প্রাপ্ত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাঁচজন নারীর একজন। তার পরিচালিত সংগঠন বেলাও ২০০৩ সালে জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম ঘোষিত গ্লোবাল ৫০০ রোল অফ অনার্স পুরস্কারে অর্জন করেছিল।

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।

এম সাখাওয়াত হোসেন ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন।    ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি কমান্ড অ্যান্ড জেনারেল স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক হন। ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর অর্জন করেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক এম সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) থেকে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। 


তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি, কাকুল থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭২ সালে দেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষক, গবেষক ও কলামিস্ট হিসেবেও মি. হোসেনের পরিচিতি রয়েছে।

ফরিদা আখতার

তার জন্ম চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন ফরিদা আখতার। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা। বর্তমানে তিনি উবিনীগ-এর (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। 


তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে নারী ও গাছ, কৈজুরী গ্রামের নারী ও গাছের কথা। তিনি নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে নিবিড়ভাবে দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন।  তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির ছাত্রী থাকার সময় অধ্যাপক ইউনূসকে সরাসরি শিক্ষক হিসাবে পেয়েছিলেন। তার স্বামী ফরহাদ মজহার বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য লেখক ও কলামিস্ট।

শারমিন মুর্শিদ 


নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ গ্রুপ ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি ২০২১ সালে কক্সবাজারেরর ৭০০ একর বন ভূমি উদ্ধারে আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ ‘মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়া পাপেট শো, মঞ্চনাটকের আয়োজনও করত। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে এই সাংস্কৃতিক দলটির কাজের ওপর ‘মুক্তির গান’ নামের একটি বিখ্যাত তথ্যচিত্র তৈরি হয়।

ফারুক-ই-আজম

ফারুক–ই–আজম উত্তর চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ফরহাদাবাদ গ্রামের গুল মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নিম্নবিত্ত এক কৃষক পরিবারের বড় সন্তান ছিলেন তিনি। ফারুক–ই–আজম ১৯৬৬ সালে হাটহাজারীর কাটিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে তিনি খুলনা থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন।


 একজন মুক্তিযোদ্ধা যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য চতুর্থ সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার- বীর প্রতীক পদবিতে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’-এর উপঅধিনায়ক। ফারুক-ই-আজম ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রামে প্রথম বিজয় মেলার অন্যতম সংগঠক এবং পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

সুপ্রদীপ চাকমা


পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত।
সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম ১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত ছিলেন সুপ্রদীপ চাকমা। এ ছাড়া রাবাত, ব্রাসেলস, আঙ্কারা এবং কলম্বোতে বাংলাদেশ মিশনেও তিনি বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন।

বিধান রঞ্জন রায়

তিনি ১৯৬৩ সালে সুনামগঞ্জে জেলার মধ্যনগর উপজেলার মধ্যনগর বাজার আবাসিক এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এছাড়া তিনি ১৯৮৮ সালে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।


তিনি পূর্বে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক ও অধ্যাপক।

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন

খালিদ হোসেন ১৯৫৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের মক্কার বাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ একজন ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ায় লেখাপড়া করেন। 


১৯৭১ সালে সাতকানিয়া আলিয়া মাহমুদুল উলুম মাদ্রাসা থেকে প্রথম বিভাগে আলিম ও ১৯৭৩ সালে ফাযিল পাশ করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চন্দনপুরা দারুল উলুমে হাদিস অধ্যয়ন করেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে কামিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 
১৯৮২ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও ১৯৮৩ সালে একই বিষয়ে এমএ পাশ করেন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। 

২০০৭ সাল থেকে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার ধর্মীয় ও সাহিত্য বিষয়ক মুখপত্র মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক ও হালিশহর এ-ব্লক হজরত উসমান (রা.) জামে মসজিদের খতিব, আল জামিয়াতুল আরবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরির সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা নির্বাচিত হন। 

২০২৩ সালের ৮ জুলাই থেকে তিনি চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কুরআনিক সায়েন্সেস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। একজন ইসলামিক স্কলার এবং হেফাজতে ইসলামের সাবেক নায়েব-ই-আমীর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা।

নূরজাহান বেগম

 নূরজাহান বেগম ঢাকার ধামরাইয়ের সূয়াপুর ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের একজন বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০১০ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান, তার আগে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম জেলার জোবরা গ্রামে যখন গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প শুরু করেন তখন ছিলেন অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম দিকের অন্যতম সহযোগী। 


বর্তমানে তিনি গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৮ সালে গ্রামীণ ফাউন্ডেশন কর্তৃক সুসান এম. ডেভিস লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০০৯ সালে ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। 

মোঃ নাহিদ ইসলাম


নাহিদ ইসলামের ডাকনাম "ফাহিম"। তার জন্ম ১৯৯৮ সালে ঢাকায়। ২০১৪ সালে ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। ২০২২ সালে অনার্স পাস করেন তিনি। বর্তমানে তিনি একই বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী।  তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় নেতা। 

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া 

আসিফ মাহমুদের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের আকুবপুর গ্রামে।আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার জন্ম ১৪ জুলাই ১৯৯৮। আসিফ মাহমুদ ঢাকার তেজগাঁও থানার নাখালপাড়া হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। তিনি আদমজী ক্যান্টমেন্ট কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও কলেজটির বিএনসিসি ক্লাবের প্লাটুন সার্জেন্ট ছিলেন। 


কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। 

শিক্ষার্থীর হত্যা ও বিনা বিচারে আন্দোলনকারীদের নির্যাতনের জন্য অতি মানবীয় ভূমিকা পালন করেন তিনি এবং তার সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তিনি সহ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলম মিলে সারা দেশে একযোগে অসহযোগ আন্দোলন এবং পরিশেষে লংমার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি সফলভাবে ডাক দেন। যার ফলশ্রুতিতে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়।
মোঃ নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বাংলাদেশে ইতিহাসে কোনো অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়া সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। ঢাকা শহরের বাসিন্দা নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। কুমিল্লার মুরাদনগরের বাসিন্দা আসিফ মাহমুদও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্বের স্নাতকোত্তর ছাত্র। 

এই দুই ছাত্রনেতা কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন যা আওয়ামী লীগের পতন নিশ্চিতে ভূমিকা রাখে। তাঁদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মুখেই শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান। জুলাই থেকে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় যেখানে পাঁচ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। নাহিদ গত এপ্রিল মাসে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব এবং আসিফ এই সংগঠনের ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন কারা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস1 ছিলেন। তার সাথে এই সরকারে ১৭ জন উপদেষ্টা ছিলেন, যার মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন সমন্বয়কের নামও ছিল। এই সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ নেওয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গভবনে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নাম আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন তিনি ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থান করছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে বৈঠক করে উপদেষ্টামণ্ডলীর বাকি সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করেছেন বলে মন্ত্রিপরিষদের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।  প্রধান উপদেষ্টা প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, খাদ্য, নৌ-পরিবহন, কৃষি, ভূমি, রেলপথ, জনপ্রশাসন, পানিসম্পদ, সংস্কৃতি, ও বাণিজ্যসহ মোট ২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগও থাকবে তাঁর দায়িত্বে।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অধীনে অন্য যেসব মন্ত্রণালয় থাকবে তা হলো, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে যারা রয়েছেন তারা হলেন- 
  • ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদঃ অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
  • অধ্যাপক আসিফ নজরুলঃ  আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
  • আদিলুর রহমান খানঃ  শিল্প মন্ত্রণালয়। 
  • হাসান আরিফঃ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
  • মো. তৌহিদ হোসেনঃ  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
  • সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানঃ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
  • শারমিন মুর্শিদঃ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। 
  • অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেনঃ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
  • আ. ফ. ম. খালিদ হোসেনঃ ধর্ম মন্ত্রণালয়।
  • ফরিদা আখতারঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
  • নুরজাহান বেগমঃ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
  • ফারুক-ই-আজমঃ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।
  • সুপ্রদীপ চাকমাঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
  • বিধান রঞ্জন রায়ঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
  • মো. নাহিদ ইসলামঃ  ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় । 
  • আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াঃ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ কী 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ কী? বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট হয়েছে, সংগঠিত অস্থায়ী সরকার ব্যবস্থা হলো। এই সরকারে মোহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন। সরকারের উপদেষ্টাগণ সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

মূলত আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে হতাহতের ঘটনা, গ্রেফতার এবং নির্যাতনের অভিযোগ জানিয়ে বহু মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আবার থানায় উত্তেজিত জনতার হামলায় পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনাও আছে। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থার সংকট এখন প্রকট। বিভিন্ন স্থানে ঘটছে ডাকাতি, লুটপাট, ভাঙচুর।

এমন অবস্থায় আইনশৃঙ্খলায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনাই নতুন সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এখানে এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনগণ -কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। দু’পক্ষই অনিরাপদ বোধ করছে। এই জায়গায় একটা বিশ্বাস এবং আস্থা খুব দ্রুতই তৈরি করতে হবে। দেশের সার্বিক অবস্থার উন্নতি করে দর মত নির্বিশেষে সকলের সম্মতিতে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরী করাই হচ্ছে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজ।

লেখকের শেষ কথাঃ

এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের পরিচয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে শেয়ার করে দিতে পারেন। আজকের আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। aminulit.com   এর সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url