ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যপ্রণালী এবং নোবেল পুরস্কার সম্পর্কে জেনে নিই

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যপ্রণালী এবং নোবেল পুরস্কার সম্পর্কেআপনি কি জানেন? আজ আমি ড. মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।


এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোন বিষয়ে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বা কতগুলো পুরস্কার পেয়েছেন সে সম্পর্কে জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

 সূচিপত্রঃ  ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যপ্রণালী এবং নোবেল পুরস্কার সম্পর্কে জেনে নিই

.
আমাদের শ্রদ্ধেয় স্যার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের অহংকার এবং বাঙালি জাতিরও অহংকার। ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন সামজিক উদ্যোক্তা, সমাজসেবক ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। তিনি ২০০৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা এবং ক্ষুদ্রঋণ ও ক্ষুদ্রবিত্ত ধারণার প্রবর্তনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। 

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্ম এবং লেখাপড়া

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল এবং চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। 
১৯৭১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (জিপিইডি) থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭১-এমুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নাগরিক কমিটি গঠন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গড়ে তোলেন। 

সেখানে অন্য বাঙালিদের সঙ্গে বাংলাদেশ তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্যদূরীকরণে উদ্যোগী হন। পরে দারিদ্র্য দূরীকরণে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৬ সালে তিনি এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। 

এ পুরস্কার ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’, ‘কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল’সহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২৮ জুন তার জন্মদিনকে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিকভাবে ‘সামাজিক ব্যবসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। 

এখন পর্যন্ত দারিদ্র্য দূরীকরণে ক্ষুদ্রঋণ বা সামাজিক ব্যবসার এই মডেল পৃথিবীর ৪০টির বেশি দেশে ১৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ধারণ করে চলেছে। এ ছাড়া পৃথিবীর ৮০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে তার নামে ‘ইউনূস সোশ্যাল বিজনেস সেন্টার’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ড. ইউনূসের চিন্তা, কাজ, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও তার জীবনাদর্শ নিয়ে গবেষণা করা হয়। 
কানাডা ও জাপানের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে ড. ইউনূসের জীবনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত কয়েক দশকে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ মৎস্য ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ উদ্যোগ, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ শক্তিসহ ৫০টির বেশি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের কার্যপ্রণালী

ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং সমাজসেবক, যিনি ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। গ্রামীণ ব্যাংক, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত একটি মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান, যা মূলত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক সেবা প্রদান করে। ১৯৮৩ সালে ড. ইউনুস গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যা মূলত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে। এর মূল কার্যক্রমগুলো নিম্নরূপঃ


ক্ষুদ্রঋণ প্রদান: গ্রামীণ ব্যাংক মূলত দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে। এই ঋণগুলো সাধারণত জামানতবিহীন এবং সহজ শর্তে প্রদান করা হয়, যাতে দরিদ্র মানুষ তাদের ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারে বা বিদ্যমান ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারে।

সঞ্চয় প্রকল্প: গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্প পরিচালনা করে, যেখানে গ্রাহকরা তাদের সঞ্চয় জমা রাখতে পারে এবং সুদ পেতে পারে। এটি দরিদ্র মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: গ্রামীণ ব্যাংক তার গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনা করে, যাতে তারা তাদের ব্যবসা পরিচালনা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারে।

স্বাস্থ্যসেবা: গ্রামীণ ব্যাংক স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পও পরিচালনা করে, যেখানে গ্রাহকরা কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারে।

নারীর ক্ষমতায়ন: গ্রামীণ ব্যাংক বিশেষভাবে নারীদের জন্য ঋণ প্রদান করে, যাতে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারে এবং তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে।

সামাজিক ব্যবসা: ড. ইউনুস সামাজিক ব্যবসার ধারণা প্রবর্তন করেন, যেখানে ব্যবসার মূল লক্ষ্য লাভের পরিবর্তে সামাজিক সমস্যার সমাধান।

গ্রামীণ ব্যাংকের এই কার্যক্রমগুলো দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করতে এবং তাদের আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে সহায়ক। ড. ইউনূসের এই উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে এবং অন্যান্য দেশেও অনুকরণীয় মডেল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোন ধারণার প্রবর্তক ছিলেন

ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোন ধারণার প্রবর্তক ছিলেন? ড. ইউনূসকে ক্ষুদ্রঋণের ধারণার কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৬ সালের ডিসেম্বরে, ইউনূস অবশেষে জোবরার দরিদ্রদের ঋণ দেওয়ার জন্য সরকারি জনতা ব্যাংক থেকে একটি ঋণ পান। প্রতিষ্ঠানটি তার প্রকল্পের জন্য অন্যান্য ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের একজন অত্যন্ত প্রশংসিত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি একজন সামাজিক কর্মী, অর্থনৈতিক গবেষক, এবং ব্যবসা ব্যবস্থাপক ছিলেন। তার জীবন একটি উদাহরণ যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায় কীভাবে সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যবসা করা যায়, তা দেখায়।

ড. ইউনূস তার জীবনের বেশিরভাগ সময় গ্রামীণ এলাকায় কাজ করেছিলেন, যেখানে তিনি দরিদ্র লোকের জন্য ঋণ প্রদান করেছিলেন। তার প্রধান কাজ ছিল ছোট ঋণ প্রদান করা, যা সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রান্তিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক সাহায্য করে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্যান্য কাজের মধ্যে তার গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পে অংশগ্রহণ ছিল, যা গরিব লোকের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য সেবা, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং অন্যান্য সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পে সাহায্য করে। তার প্রধান লক্ষ্য ছিল গরিব লোকের জন্য সামাজিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক স্থিতি উন্নত করা।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সকল পুরস্কার

ড. মুহাম্মদ ইউনূস যিনি ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন, তার জীবনে অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার অর্জন করেছেন। নোবেল পুরস্কার একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীর ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সফল ও অনন্য সাধারণ গবেষণা ও উদ্ভাবন বা মানব কল্যাণমূলক তুলনারহিত কর্মকাণ্ডের জন্য প্রদান করা হয়। 


এটি পদার্থ বিজ্ঞান, ফিন্যান্স, রসায়ন, চিকিৎসা শাস্ত্র, সাহিত্য ও শান্তি ক্ষেত্রে প্রদান হয়। এই পুরস্কারকে সারা বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদেরকে ইংরেজিতে নোবেল লরিয়েট বলা হয়।

তার উল্লেখযোগ্য কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা নিম্নরূপঃ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৬ সালে নোবেল শান্তিতে ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তন এবং গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে এই পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও
১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট আওয়ার্ড।
১৯৮৪ সালে ব্রাহ্মণ ম্যাগসেসে পুরস্কার।
১৯৮৫ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাওয়ার্ড।
১৯৮৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার।
১৯৮৯ সালের আগা খান অ্যাওয়ার্ড।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯৪ সালে কি কি পুরস্কার পেয়েছিলেন-

  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার,
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিফার শান্তি পুরস্কার,
  • বাংলাদেশ থেকে ড. মুহাম্মদ ইব্রাহিম স্মৃতি স্বর্ণপদক পুরস্কার পেয়েছিলেন।
১৯৯৫ সালে সুইজারল্যান্ড থেকে পেয়েছিলেন ম্যাক্স সছমিধেইনি ফাউন্ডেশন ফ্রিডম পুরস্কার
বাংলাদেশ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন রোটারারি ক্লাব ফাউন্ডেশন পুরস্কার

১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক সাইমন বলিভার পুরস্কার এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন ভ্যানডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় বিশিষ্ট আলামনাই পুরস্কার

১৯৯৭ সালের পুরস্কার

  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে আন্তর্জাতিক এক্টিভিটিস্ট পুরস্কার
  • জার্মানি থেকে প্লানেটরি কনশিয়াশনেস বিজনেস ইনোভেশন পুরস্কার
  • নরওয়ে থেকে হেল্প ফর সেলফ হেল্প পুরস্কার
  • ইতালি থেকে ম্যান ফর পিস এওয়ার্ড
  • তাছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্ব ফোরাম পুরস্কার

১৯৯৮ সালের পুরস্কার

  • জাপান থেকে অযাকি পুরস্কার
  • ভারত থেকে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার
  • ফ্রান্স থেকে জাস্টটি অফ দ্যা ইয়ার পুরস্কার
  • ভারত থেকে রাথিন্দ্রা পুরস্কার এবং
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন রোটারারি এ্যাওয়ার্ড ফর ওয়ার্ল্ড আন্ডারস্ট্যান্ডিং।
  • ওয়ান ওয়ার্ল্ড ব্রডকাস্টিং ট্রাস্ট মিডিয়া পুরস্কার
  • স্পেন থেকে পেয়েছিল দ্যা প্রিন্স অফ আউষ্ত্তরিয়া এ্যাওয়ার্ড ফর কনকর্ড
  • অস্ট্রেলিয়া থেকে সিডনি শান্তি পুরস্কার।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস ২০০০ সালে যে পুরস্কার পানঃ

  • ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এই পুরস্কার তাকে ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রশংসা করে। এটি নোবেল শান্তি পুরস্কারের মধ্যে তার প্রথম পুরস্কার ছিল। এছাড়াও
  • ওমেগা অ্যাওয়ার্ড অফ এক্সিলেন্সি ফরফ লাইফ টাইম এচিভমেন্ট পেয়েছিলেন সুইজারল্যান্ড থেকে
  •  ইতালি থেকে পেয়েছিলেন এ্যাওয়ার্ড অফ দ্যা মেডেল অফ দ্যা প্রেসিডেন্সি
  • জর্ডান থেকে পেয়েছিলেন কিং হুসেইন হিউম্যানিটারিয়ান লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড 
  • বাংলাদেশ থেকে পেয়েছিলেন আই ডি ই বি গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ২০০১ সালের পুরস্কার 

  • ইটালি থেকে আরতুসি পুরস্কার
  • জাপান থেকে গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্যা ফুকুঅকা এশিয়ান কালচার পুরস্কার
  • ভিয়েতনামা থেকে হো চি মিন পুরস্কার
  • স্পেন থেকে নাভারা ইন্টারন্যাশনাল এইড এ্যাওয়ার্ড
২০০২ সালে প্রেসিলেট যুক্তরাষ্ট্র থেকে মহাত্মা গান্ধী পুরস্কার অর্জন করেন।

১৯৯৩ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর উল্লেখযোগ্য পুরস্কার

১৯৯৩ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনুস বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। এর মধ্যে  উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের বিস্তারিত নিচে দেওয়া হলোঃ
  • কেয়ার পুরস্কার (CARE Award): এই পুরস্কারটি ড. ইউনুসকে তাঁর মানবিক কাজের জন্য প্রদান করা হয়েছিল। কেয়ার একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করে।
  • মানবহিতৈষণা পুরস্কার (Humanitarian Award, USA): এই পুরস্কারটি ড. ইউনুসকে তাঁর মানবিক অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছিল। এটি মূলত তাঁর ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়নের স্বীকৃতি।
  • মুহাম্মদ সাহেবুদ্দিন বিজ্ঞান (সামাজিক অর্থনীতি) পুরস্কার (Muhammad Sahebuddin Science (Social Economy) Award, Sri Lanka): এই পুরস্কারটি ড. ইউনুসকে সামাজিক অর্থনীতিতে তাঁর অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছিল।
  • রিয়াল এডমিরাল এম এ খান স্মৃতি পদক (Rear Admiral M.A. Khan Memorial Medal, Bangladesh): এই পদকটি ড. ইউনুসকে তাঁর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছিল।
  • বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (World Food Prize): যদিও এটি ১৯৯৪ সালে প্রদান করা হয়েছিল, এটি উল্লেখযোগ্য কারণ এটি ড. ইউনুসের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের স্বীকৃতি। 
  • এছাড়াও তিনি আরো কিছু পুরুস্কার পান সেগুলো হলোঃ
  • যুক্তরাজ্য থেকে পেয়েছিলেন বিশ্ব টেকনোলজি নেটওয়ার্ক পুরস্কার
  • সুইডেন থেকে পেয়েছিলেন ভলভো পরিবেশ পুরস্কার
  • কলম্বিয়া থেকে পেয়েছিলেন জাতীয় মেধা পুরস্কার
  • ফ্রান্স থেকে পেয়েছিলেন দ্যা মেডেল অফ দ্যা পেইন্টার অসওয়ার্ল্ড গুয়ায়াসামিন পুরস্কার

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ২০০৪ সালের পুরস্কার

  • স্পেন থেকে তেলিছিনকো পুরস্কার
  • নিক্কেই এশিয়া পুরস্কার জাপান থেকে
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে লিডারশিপ ইন সোশ্যাল অন্টাপ্রিনেয়ার এ্যাওয়ার্ড
  • ইটালি থেকে সিটি অফ অরভিতো পুরস্কার
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল এ্যাওয়ার্ড এবং দ্যা ইকোনমিস্ট ইনোভেশন পুরস্কার

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ২০০৫ সালের পুরস্কার

  • স্পেন থেকে গোল্ডেন ক্রস অফ দ্যা সিভিল অর্ডার অফ দ্যা সোশ্যাল সলিডারিটি
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফ্রিডম অ্যাওয়ার্ড
  • স্পেন থেকে ফাউন্ডেশন অফ জাস্টিস
  • ইটালি থেকে প্লাইজ টু পন্টে এবং
  • বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি গোল্ড মেডেল
  • ২০০৯ সালে প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা।
  • ২০১০ সালে কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ সম্মাননা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই পুরস্কারগুলো তার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। তার কাজের মাধ্যমে তিনি বিশ্বব্যাপী দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করতে সহায়তা করেছেন।

২০০৭ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল

  • কিং ক্লুজ আন্তর্জাতিক পুরস্কার (King Claus International Award)।
  • স্পেন থেকে পেয়েছিলেন রেড ক্রস স্বর্ণপদক
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন রুবিন মিউজিয়াম মানডালা এ্যাওয়ার্ড এবং বাফি গ্লোবাল এচিভমেন্ট এ্যাওয়ার্ড
  • জার্মানি থেকে পেয়েছিলেন ভিশন অ্যাওয়ার্ড
  • ভারত থেকে পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্ম শতবার্ষিকী স্মারক
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন নিকলস চ্যান্সেলর পদক
  • থেকে পেয়েছিলেন ইএফআর বাণিজ্য সপ্তাহ পুরস্কার
  • ইউনেস্কো মহাত্মা গান্ধী স্বর্ণ পদক (UNESCO Mahatma Gandhi Gold Medal)।
  • আন্তর্জাতিক সিমন বলিভার পুরস্কার (International Simon Bolivar Prize)।
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন জাতিসংঘ সাউথ - সাউথ সহযোগিতা পুরস্কার
  • ব্রাজিল থেকে পেয়েছিলেন মেডেল অফ ওনার
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন গ্লোবাল ট্রেইলব্লেজার পুরস্কার
  • ড. ইউনুস যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন এ বি আই সি সি এ্যাওয়ার্ড ফর লিডারশিপ ইন গ্লোবাল ট্রেড
  • ফিলিপাইন থেকে পেয়েছিলেন ১ম আহপাডা গ্লোবাল পুরস্কার
  • ভারত থেকে পেয়েছিলেন সাকাল বর্ষ ব্যক্তিত্ব পুরস্কার
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন বিশ্ব উদ্যোগী নেতৃত্ব পুরস্কার এবং সামাজিক উদ্যোক্তা পুরস্কার

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ২০০৮ সালের পুরস্কার

২০০৮ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুলা দ্য সিলভা প্রোজেক্ট উদ্যোগী পুরস্কার প্রদান করেন। এটি তার অসামান্য সামাজিক উদ্যোগ এবং ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রদান করা হয়।

 ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০০৯ সালে কোন দেশ থেকে পুরস্কার পেয়েছিল

  • ২০০৯ সালের যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছিলেন এইসেনহওএর মেডেল ফর লিডারশিপ অ্যান্ড সার্ভিস, গোল্ড মেডেল অফ ওনার এ্যাওয়ার্ড এবং প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম
  • পর্তুগাল থেকে পেয়েছিলেন এস্টরিল গ্লোবাল ইস্যুস ডিসটিনগুইশড বুক প্রাইজ
  • স্লোভা কিয়া থেকে পেয়েছে গোল্ডেন বিয়াটেক এ্যাওয়ার্ড
  • পোর্টল্যান্ড থেকে পিআইসিএমইটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন
  • এছাড়াও বৈরুত লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন
এছাড়াও ড. মুহাম্মদ ইউনূস ারো যে গুরুত্বপূর্ণ পুরুস্কার পেয়েছেন তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
  • ২০১০ সালের পুরস্কারঃ ২০১০ সালে ডক্টর ইউনুস কংগ্রেসোনাল গোল্ড মেডেল ও সোলারওয়াল্ড আইনস্টাইন এ্যাওয়ার্ড পুরস্কার পেয়েছিলেন
  • ২০১১ সালে ড. ইউনুস Chicago Illinois থেকে পেয়েছিলেন St. Vincent de Paul award by depual University
  • USA থেকে পেয়েছিলেন Alone University middle for entrepreneurial Leadership
  • ২০১২ সালে USA থেকে ডক্টর পেয়েছিলেন Jean Mayer Global Citizen award by the institute for global leadership Of Tufts University
  • International freedom award by the national civil rights museum
  • Transformational Leadership award
  • Outstanding Entrepreneur Of our time and the best humanitarian Of the year by OFC venture Challenge
  • USA থেকে ডক্টর ইউনুস ২০১৩ সালে যে পুরস্কারগুলো পেয়েছিলেন তা হলো- Asian American/ Asian research leadership award
  • Forbes 400 Philanthropy forum lifetime achievement award for social entrepreneurship by for bes Magazine
  • Salute to Greatness award 2013 by Martin luther king centre
  • Albert schweitzer Humanitarian award 2013 by quinneipiac University
  • Oxford UK থেকে ২০১৩ সালের পেয়েছিলেন Global treasure Avoid by Skoll Foundation
  • ড. ইউনূসের ২০২১ সালের পুরস্কারঃ ডক্টর ২০২১ সালের মোট দুইটি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তা হলো-জাতিসংঘ ফাউন্ডেশনের চ্যাম্পিয়ন অব গ্লোবাল চেঞ্জ পুরস্কারটি এবং অলিম্পিক লরেল পুরস্কারও পেয়েছিলেনর।
এই পুরস্কারগুলো তার ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য প্রদান করা হয়েছিল।

লেখকের শেষ কথা

ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তার জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, যা তার প্রয়াসের মাধ্যমে সমাজে পরিবর্তন আনে। তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেখানো যে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে দারিদ্রের ফাঁদ থেকে স্থায়ীভাবে উদ্ধার করা যায়। তার প্রয়াসের মাধ্যমে তিনি অনেক মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য অবদান রাখেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

এই আর্টিকেলটির মধ্যে থেকে ডক্টর ইউনূসের কার্যপ্রণালী এবং সব ধরনের পুরস্কার সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধবী ও পরিচিতদের মাঝে নিচের যেকোনো শেয়ার অপশন থেকে শেয়ার করে দিতে পারেন। আজকের আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার কোনো মতামত বা তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন। aminulit.com   এর সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url