কলা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা

লা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি জানেন, পাকা কলা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়, যদি না জানেন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য।


পাকা কলার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন। পাকা কলাতে রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি এবং ফোলেট। পাকা কলা সুস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।

সূচিপত্রঃ কলা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা

.
কলা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কলা খেতে আমরা প্রায় সকল মানুষই পছন্দ করি এবং অন্যান্য ফলের মধ্যে কলা অন্যতম। কলাতে কি কি উপকারিতা আছে সেগুলো আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে কলার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো।

পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিই

পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সাধারণভাবে অনেকেই জানি না। পাকা কলাতে রয়েছে অতিরিক্ত উপকারিতা। কলা দুই ভাবেই খাওয়া হয়ে থাকে এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। কাঁচা কলা খেতে পুষ্টি অনেক। এটি পটাসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা একটি প্রাকৃতিক ভাসোডিলেটর হিসেবে কাজ করে। 
পেশী সংকুচিত, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে কাঁচা কলা বেশ উপকারি। পাকা কলা রক্তে ইনসুলিনের নিঃসরণে সহায়তা করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায়ক। এছাড়াও কলা ত্বকের যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফটোকেমিক্যাল থাকে, তা ত্বক, শরীর এবং চুলকে পুষ্টি প্রদান করে।

 কলা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, ব্রণ দূর করতে, মুখের কালো দাগ ও বলিরেখা দূর করতে দারুণভাবে সাহায্য করে। একটি পরিপুষ্ট কলায় প্রায় ৮০ ক্যালোরি পুষ্টি পাওয়া যায়। প্রিয় পাঠক আজকে আমরা এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আলোচনা করবো কলা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা। চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে -
  • পাকা কলা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
  • পাকা কলা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে।
  • কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • পাকা কলা মলদ্বারে সমস্যাগুলো দূর করে ।
  • পাকা কলা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • কলা হজমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে।
  • চুল এবং ত্বকের যত্নে পাকা কলা।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পাকা কলা।
  • পেটের সমস্যা প্রতিরোধে কলা।
পাকা কলা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে

আপনি কি আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত। একটি পাকা কলা পারে আপনার অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে। একটি পাকা কলাতে রয়েছে অতিরিক্ত উপকারিতা, যা আমরা সাধারণভাবে জানি না। কলা দুই ভাবেই খাওয়া হয়ে থাকে এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারি। কাঁচা কলাতে রয়েছে অনেক পুষ্টি। 
এটি পটাসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা একটি প্রাকৃতিক ভাসোডিলেটর হিসেবে কাজ করে। তাই পাকা কলা খাওয়ার ফলে একজন মানুষের শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। একটি পাকা কলাতে রয়েছে বহুবিধ পুষ্টিগুন যা খেলে আপনার শরীর ভালো থাকবে অন্যদিকে আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করবে। আপনার শরীরের ওজন কমাতে পাকা কলার কোন বিকল্প নেই। তাই আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে একটি করে পাকা কলা খান।

পাকা কলা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে

পাকা কলা শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে। কলা অত্যধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল, এবং এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদান যেমন ভিটামিন, আমিষ, খনিজ, ও ক্যালরি সরবরাহ করে। এই ফলের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আঁশ, শর্করা, ও অন্যান্য উপাদান। 

এই ফলের মাধ্যমে নিয়মিত শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। শরীরের শক্তি ফিরে আনতে এবং এনার্জি দিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে যারা, খেলাধুলা করেন কিংবা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। অনেক সময় দেখা যায়, তাদের শরীর দূর্বল হয়ে যায়। শরীরের দূর্বলতা কাটিয়ে শক্তি ফিরিয়ে আনতে কলার বিকল্প নেই। শরীরের দুর্বলতা কেটে ওঠার জন্য আপনি নিয়মিত একটি করে কলা খেতে পারেন।

কলা কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে

সুস্থ দেহ সুস্থ মন এরই নাম স্বাস্থ্য। আর তাই স্বাস্থ্য কে সুস্থ, সুন্দর এবং ভালো রাখার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত একটি করে পাকা কলা খেতে হবে। যদি আমরা পাকা কলা কিংবা কাঁচা কলা নিয়মিত খায় তাহলে আমাদের কিডনি সুস্থ থাকবে। আমরা জানি পাকা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি উপাদান যার ফলে আমাদের শরীর থাকে সুস্থ, সুন্দর এবং স্বাভাবিক। পাকা কলা খেলে কিডনি সমস্যা অনেকটা দূর করা যায়।

পাকা কলা মলদ্বারের সমস্যা দূর করে থাকে

পাকা কলা মলদ্বারে সমস্যাগুলো দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। মলদ্বারের বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে যেগুলো অনেক কষ্টে সাধ্য, যেমন- ইনফেকশন। আপনার মলদ্বারের সমস্যা দূর করার জন্য কলার বিকল্প নেই। সেটা হোক কাঁচা কলা বা পাকা কলা। মলদ্বারের সমস্যা দূর করার জন্য আপনি কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেনঃ

  • পাকা কলা সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুনঃ পাকা কলা ঠান্ডা, শুকনো জায়গায় রাখুন। তাই আপনি যত্ন নেবেন যে পাকা কলা অতিরিক্ত ঠান্ডা জায়গায় না রেখে শুকনো জায়গায় রাখুন।
  • পাকা কলা পরিষ্কার করুনঃ পাকা কলা পরিষ্কার করার জন্য একটি পরিষ্কার করার ব্রাশ বা পরিষ্কার করার কাপ ব্যবহার করুন। পাকা কলা পরিষ্কার করার সময় ধারাবাহিক পানি ব্যবহার করুন।
  • পাকা কলা পরিষ্কার করার পর তা শুকিয়ে নিতে হবে। এটা মলদ্বারের সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে।
পাকা কলা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

কলা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি অন্য খাবারের পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আঁশযুক্ত হওয়ায় শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন-বি৬ রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও এটি বেশ কার্যকর। পাশাপাশি কলা খেতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং কোলন সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ দূর করতে এটি উপকারী খাবার হিসেবে পরিচিত। আপনি যদি নিয়মিতভাবে কলা খান তবে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে তাই কলা খাওয়ার কোন বিকল্প নেই।

কলা হজমের সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করে

পাকা কলা খেতে সুস্বাদু নয় মাত্র, পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এটি অনন্য। নিয়মিত কলা খেলে দূরে থাকা যায় অনেক রোগ থেকে। ফাইবারযুক্ত কলা নিয়মিত খেলে দূর হবে হজমের সমস্যা। কলায় এমন কিছু উপাদান আছে যা পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে। আপনি প্রতিদিন কলা খেলে আপনার হজমে সমস্যা দূর হয়ে যায়, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও মুক্তি পাবেন। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখার কোন বিকল্প নেই ।

চুল এবং ত্বকের যত্নে পাকা কলা

কলা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী এবং স্বাস্থ্যজ্জল ফল। এটি চুলকে নরম ও ঝলমলে করে, ব্রণ এবং বলিরেখা দূর করে, ত্বককে উজ্জ্বল করে এবং ত্বকের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য বজায় রাখে। কলা চুলের যত্নে ব্যবহার করার কিছু উপায়ঃ
চুলের যত্নে কলাঃ
  • একটি কলা ভালো মতো পেস্ট করে নিন। এর সাথে ২ চামচ টক দই মিশিয়ে চুলে লাগান। সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করলে এক মাসের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। চুল আগের চেয়ে উজ্জ্বল এবং ঝলমলে হবে।
  • ২-৩ টি কলা পেস্ট করে এর সাথে ২-৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং স্ক্যাল্পে ভালো মতো লাগান। এরপর মাথায় একটি শাওয়ার ক্যাপ বা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিষ্প্রাণ এবং ফ্রিজি চুলের জন্য এটি একটি কার্যকর হেয়ার মাস্ক।
ত্বকের যত্নে কলাঃ

কলা পাকা হোক বা কাঁচা দুটোতেই আয়রনে পরিপূর্ণ রয়েছে, যা রক্ত শূন্যতা দূর করে।
কলা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কোষ গুলোকে রক্ষা করে এবং চট করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেয় না।
কলার খোসা ত্বকে লাগালে দূর হয় কালচে দাগ এবং ত্বককে সুন্দর রাখে।
 
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পাকা কলা

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পাকা কলা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে খেতে হবে আপনাকে কলা। তাহলে রক্তচাপের সমস্যা গুলো আশা করি দূর হয়ে যাবে।

পেটের সমস্যা প্রতিরোধে কলা

পেটে সমস্যা হয়না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কম বেশি সকলেরই পেটে সমস্যা হয়। পাকা কলা পেটের সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। সাধারণত যাদের আমাশয় রয়েছে এবং পেটের অন্যান্য সমস্যা রয়েছে, নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে সেগুলো দ্রুতই সমাধান হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন একটি কলা খেলে আপনি আপনার স্বাস্থ্যর উন্নতি করতে পারেন।

পাকা কলার পুষ্টিগুণ জেনে নিন

পাকা কলা খেতে প্রায় সবাই পছন্দ করে। এটি অনেক স্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর ফল। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, আয়রণ ও সকল প্রকার পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি।
এসব পুষ্টিগুণ ছাড়াও ফলটি হলো মুখরুচিকর। সুমিষ্ট ফল হওয়ায় কলা খেতে অনেক ডায়াবেটিস রোগীরা ভয় পায়। কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কলা বেশ উপকারি ফল। যদিও শুনতে অবাক লাগে কিন্তু তবুও সত্য, পৃথিবীতে অনেক প্রকার রোগ বা অসুখ আছে 

যা মেডিসিনের চেয়ে কলা বেশি কার্যকারী। সব-সময় চটজলদি হাতের নিকটে মিলে যায় এই ফল। দামের দিক থেকে ফলের গুণাগুণ অনেক বেশি। মধু যেমন উপকারি তেমনি কলাও বেশ উপকারি। কলা খাওয়ারও সময় বা টাইম মেনে চললে মুক্তি পাওয়া যায় অনেক রোগ থেকে ।

পাকা কলা শরীরে লবণের ভারসাম্য ধরে রাখে

আপনি যদি পাকা কলা খান তাহলে আপনার শরীরে লবণের ভারসাম্য বৃদ্ধি পেতে পারে। কলা একটি উচ্চ লবণ সম্পন্ন খাবার হিসেবে পরিচিত এবং এটি আপনার শরীরে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে। তবে এটি মাত্র একটি অল্প পরিমাণ লবণ সরবরাহ করে, যা আপনার দৈনিক প্রয়োজনীয় লবণের পরিমাণ পূরণ করতে পর্যাপ্ত নয়।


আপনি অন্য খাবারে যেমন মাছ, মাংস, ডেয়ারি প্রোডাক্ট, সবজি এবং অন্যান্য উচ্চ লবণ সম্পন্ন খাবার খেতে পারেন যা আপনার লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে। পাকা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন। আমাদের প্রতিটি মানুষের শরীরে লবণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। 

আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন। আর পাকা কলাতে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন থাকার কারণে  আমাদের শরীরের আয়োডিনের অভাবে দূর করে থাকে। শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ থাকার জন্য আয়োডিনের প্রয়োজনীয়তা অপারিসীম। তাই আপনারা নিয়মিতভাবে পাকা কলা খাবেন এর ফলে আয়োডিনের অভাব গুলো পূরণ হবে।

সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এই সুস্বাদু ফলে প্রচুর পরিমাণে খনিজ, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। এই পুষ্টিগুলি আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। যেমন-
  • হারানো শক্তি ফিরিয়ে আনেঃ সকালে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা দেহে পুনরায় শক্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
  • বিষণ্ণতা এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ কলা উচ্চ রক্তাচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ কলা সন্তানসম্ভব্য নারীদের জন্য উপকারি এবং কোষ্ঠকাঠিন্যতা ‍দূর করে।
  • পাকস্থলির আলসার নিরাময় করেঃ কলা পাকস্থলির আলসার নিরাময় করে।
সকালে কলা খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি এবং সহজলভ্য ফলের মধ্যে অন্যতম একটি। তবে অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ এবং অস্বাস্থ্যকর হতে পারে, তাই সকালে কলা খাওয়ার সময় এই দিকটি বিবেচনা করতে হবে। এই ফলের উপকারিতা মধ্যে কিছু অংশ নিম্নলিখিতঃ
  • বদহজম আলসার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ প্রতিদিন কলা খেলে বদহজম সমস্যা কমে যায় এবং রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • দুর্বলতার ভাব কমে যায়ঃ কলা খেলে শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে।
  • সমস্যা দূর হবেঃ যাদের নিয়মিত রাতে ঘুম হয়না, তারা কলা খেলে প্রতিদিন তাহলে এই সমস্যা দূর হবে।
  • পটাশিয়াম ও ফাইবারের পরিমাণ বেশিঃ কলায় পটাশিয়াম ও ফাইবারের পরিমাণ সব চাইতে বেশি থাকে।
  • শরীরের জন্য ভালোঃ খাওয়ার এক ঘন্টা পরে কলা খেলে শরীরের জন্য অনেক ভালো হয়।
  • হৃদ যন্ত্র ভালো রাখেঃ প্রতিদিন একটি বা দুটি কলা খেলে আপনার হৃদ যন্ত্র অনেক সচল থাকবে।
  • হার্ট এটাক ও স্টোকের ঝুকি কমবেঃ কলা খেলে হার্ট এটাক ও স্টোকের ঝুকি অনেক কমবে।
  • কিডনি সুস্থ্য থাকেঃ কলা খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • শক্তি জোগায়ঃ কলা শরীরে প্রচুর পরিমাণে শক্তি জোগায়।
  • ব্লাড ক্যান্সারের ঝুকি কমে যায়ঃ নিয়মিত কলা খেলে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুকি কমে যায়।

ক্ষতিকারক ক্যান্সার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে কলা

কলা ক্ষতিকারক ক্যান্সার থেকে বাঁচাতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করা। ক্যান্সার একটি ভয়ংকর রোগ। আর এই রোগ থেকে আমরা সকলেই পরিত্রাণ পেতে চাই। ক্যান্সার থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে প্রতিদিন সকালে নিয়মিতভাবে কলা খেতে হবে। কেননা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। শুধু কলা খেলেই ক্যান্সার থেকে বাঁচতে পারবেন এমনটা নয়। আপনাকে অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার গুলো খেতে হবে।

রাতে পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

আপনি যদি ঘুমানোর আগে একটি বা তার অধিক কলা খেয়ে ঘুমাতে পারেন, তাহলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। এটি একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ফল, যা প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, আয়রণ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। 
গবেষণায় জানা গেছে যে, যদি কোনো মানুষের ঘুমের সমস্যা থাকে এবং রাতে ঠিকঠাকভাবে ঘুম না হয় তাহলে নিয়মিতভাবে রাতে কলা খেতে পারেন। কলা খাবার ফলে ঘুমের সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। তবে সব সময় অবশ্যই আপনাকে ঘুমের আগে খেতে হবে। এছাড়াও কলা মুখরুচিকর এবং মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। 

ডায়াবেটিস রোগীরা কলা খেতে ভয় পায়, কিন্তু এটি তাদের জন্যও উপকারি ফল। কলা খাওয়ার সময় এবং পরিমাণ সঠিকভাবে মেনে চললে আরো উপকার হতে পারে। ঘুম থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেশীর টান, ইত্যাদি নানান সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়ে থেকে কলা। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে ঘুমানোর আগে কলা খান, তাহলে এসব সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে আশা করি বুঝতে পেরেছন।

নিয়মিতভাবে পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা

পাকা কলা নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আপনি ইতি মধ্যেই আমার উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। তবে এখন আমরা জানবো নিয়মিতভাবে পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা। পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি! এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। 


কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, মিনারেল, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, আয়রণ ও সকল প্রকার পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম। প্রতিদিন ১/২ টি কলা খেলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ভালো ফল পাওয়া যায়। অনেক আশ্চর্যজনক উপকারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকেও মুক্তি দিয়ে থাকে। অন্তত শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন খাবার তালিকাতে অবশ্যই রাখুন কলা। 

পাকা কলা খাওয়ার অপকারিতা জেনে নিন

পাকা কলা খাওয়ার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি পাকা কলাতে অপকারিতা রয়েছে। নিম্নে পাকা কলা খাওয়ার অপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো
  • আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ কলা খান তাহলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিদিন ঘুমানোর আগে প্রয়োজনের বেশি কলা না খাওয়াই উচিত।
  • আপনারা জানেন যে, কলা খেলে ওজন কমে যায় কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণ যদি কলা খান তবে ওজন বৃদ্ধির ও কারণ হতে পারে।
  • আপনার যদি ঠান্ডা জনিত কোন সমস্যা থাকে তাহলে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, বিশেষ করে রাতের বেলাতে। সমস্যা থাকলে আপনি যদি কলা খান তবে অনেক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • কলার ভিতরে বেশি পরিমাণ সুগার থাকে তাই অতিরিক্ত কলা না খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত কলা খেলে দাঁতের সমস্যা দেখা যায়।
বিশেষ করে কলা সহজলভ্য একটি ফল যা হাতের নাগালে পাওয়া যায় এ কারণেই প্রায় মানুষের পছন্দের একটি ফল কলা। তাই কলা আমরা নিয়মিত ভাবে খাব এবং নিয়মমাফিক ভাবে খাব। 

পাকা কলা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন

পাকা কলা খাওয়ার নিয়ম জেনে নিলে আপনি এই সুস্বাদু ফলটি সঠিকভাবে উপভোগ করতে পারবেন। সকাল বেলা এটি খেলে সারা দিন এর উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে সকালে এটি খেলেও খালি পেটে কিন্তু খাওয়া ঠিক নয়। খালি পেটে কোনোভাবেই কলা খাওয়া উচিত নয়। সকালে খেলেও অন্য কোনো খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে বা অন্য কোনো নাশতা খাওয়ার পর এটি খাওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, পছন্দের নাস্তার আগে বা সঙ্গে কলা খাওয়া যেতে পারে। সকালের খাবারে শুধুমাত্র কলা খেতে পছন্দ করেন অনেকেই কিন্তু অভ্যাস ত্যাগ করাই উচিত। কলায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক গ্লুকোজ থাকে।

শুধু কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, তাই সকালের নাস্তায় শুধু কলা না খাওয়াই ভাল। কলা খাওয়ার কিছু নিয়মাবলী নিম্নলিখিতঃ
  • রাতে বা সকালে খেতে পারেন কলা
  • যাদের ডায়াবেটিকস রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন কলা।
  • বিভিন্ন ফলের সাথে খেতে পারেন কলা
কলা খাওয়ার নিয়ম মেনে কাঁচা ও পাকা কলা উপভোগ করুন, এবং স্বাস্থ্যকর জীবন উপভোগ করুন।

প্রতিদিন কয়টি কলা খাওয়া উচিত

প্রতিদিন অন্তত একটি কলা খাওয়া উচিত। কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, যা দেহের পটাশিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া, কলা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ ও শর্করা সমৃদ্ধ, পেট ভরা ভরা লাগে এবং খিদেও কমে যায়। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া কমে এবং ওজন বাড়তে পারে না। 

কলা আমাদের রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে ফেলে এবং ইনসুলিন হরমোনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। শরীর যদি ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল না থাকে, তাহলে গ্লুকোজ ঠিকভাবে শোষিত হয় না। তখন অগ্ন্যাশয় থেকে আরও বেশি ইনসুলিন উৎপন্ন হতে থাকে। আর শরীরে বেশি ইনসুলিন থাকলে মানুষের ওজন বেড়ে যায়। 

অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার ঝুঁকি কমে রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমে কলায় থাকে যথেষ্ট পরিমাণে ট্রিপ্টোফ্যান, যা ‘হাসি-খুশির হরমোন’ বা সেরোটোনিন তৈরিতে প্রয়োজন। কলায় থাকে আরও ম্যাগনেশিয়াম, যা মন ভালো রাখতে ও ভালো ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়। তাই প্রতিদিন ফলমূলের খাবারের তালিকাতে অবশ্যই নিয়মিত কলা রাখুন ।

লেখকের শেষ মন্তব্য

কলা খাওয়ার অজানা উপকারিতা ও অপকারিতা আলোচনার মাধ্যমে আলোচিত হয়েছে যে পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতাগুলো কি কি। এবং পাকা কলার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শরীর স্বাস্থ্যের জন্য পাকা কলার ভূমিকা অপরিসীম। তাই নিয়মিত প্রতিদিন ফলমূলের খাবারের তালিকাতে রাখুন কলা। 

শরীর স্বাস্থ্যর জন্য কলার কোন বিকল্প নেই। কলা একটি সহজলভ্য ফল এবং সহজেই এ ফলটি হাতের নাগালে পাওয়া যায় আর এ কারণে এই ফলটি সবার পছন্দের একটি ফল। আশা করি উপরোক্ত আলোচনাটি সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমার ওয়েবসাইটের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url