নিজেকে সুস্থ রাখার ৩১টি সহজ উপায়
মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিমিত খাদ্য
গ্রহণের পাশাপাশি নিজেকে সুস্থ রাখার ৩১টি সহজ উপায় মেনে চলা সহ নিয়মিত ব্যায়াম,
মনকে শান্ত রাখা, অর্থের যথোপযুক্ত ব্যবহার এ গুলো গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে
কাজ করে। আপনার সুস্বাস্থ্য কিভাবে ধরে রাখবেন সেটা জানা এবং তার সঠিক পদ্ধতি
জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কথায় বলে সুস্থ দেহ সুস্থ মন এর নাম স্বাস্থ্য। তাই দেহকে সুস্থ্য রাখতে আমরা
অনেক কিছু করে থাকি। নিজেকে সুস্থ্য রাখার জন্য ঘরে রান্না করা খাবার খাওয়া
এবং বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্রঃ নিজেকে সুস্থ রাখার ৩১টি সহজ উপায়
নিজেকে ভালো রাখতে চাইলে সবার আগে নিজের প্রতি যত্নশীল হতে হবে। সুস্থ্যতার
জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া সহ বিভিন্ন কাজ করে থাকি। একটা সুপরিচিত
প্রবাদ বলে, “বিপদ আসার আগেই সাবধান হওয়া ভালো।” আর তাই নিজেকে ভালো রাখতে
সুস্থ্য থাকার জন্য ৩১টি সহজ উপায় সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
নিজেকে সুস্থ্য রাখার জন্য আমাদেরকে নিম্নের বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে।
ব্যায়াম করাঃ
নিয়মিত ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়ামের
উপকারিতা অনেক রয়েছে, যা আপনার শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা উন্নত
করতে সাহায্য করতে পারে। যেমন-
- শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে: ব্যায়াম শরীরের মাংসপেশী ও হাড়ের সবলতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: ব্যায়াম মানসিক তন্দ্রা, মনোবিকার ও ডিপ্রেশন সহ মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি করে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: নিয়মিত ব্যায়াম করলে ওজন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
- হৃদরোগ প্রতিরোধ করে: ব্যায়াম হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
- ফ্লেক্সিবিলিটি বৃদ্ধি পাবে: ব্যায়াম শরীরের মাংশপেশীর প্রসারণ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ফ্লেক্সিবিলিটি বৃদ্ধি করে।
- শক্তি ও ভারসাম্য বৃদ্ধি করে: অ্যানেরোবিক ব্যায়াম শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সবলতা বৃদ্ধি পায়।
সঠিক খাবার গ্রহণঃ
প্রতিদিন পাঁচটি সবজি আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন। সবজি আপনার শারীরিক ও
মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সুষম ও বৈচিত্র্যময় খাদ্যাভ্যাস থাকা জরুরি।
আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যাথা কি? মাথা ব্যাথার কারণ কি?
বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, গোটা শস্য এবং চর্বিহীন প্রোটিন খাওয়া আপনার
শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে পারে। অ্যাভোকাডোস, বাদাম এবং জলপাই
তেলের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত করাও একটি সুস্থ শরীরকে সমর্থন করতে
পারে।
নিজেকে সুস্থ্য রাখতে পানি গ্রহণঃ
কথায় বলে পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু সেই পানিতে যদি থাকে জীবানু তখন সেই
পানির অপর নাম হয় মরণ। আর তাই সুস্থ্য থাকতে আপনাকে বিশুদ্ধ পানি পান করতে
হবে। পানি গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন কমপক্ষে
৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত, যা আপনার শরীরের পানি শুন্যতা সহ নানা রকম কাজে
সাহায্য করে।
নিয়মিত ডাক্তারের কাছে যাওয়াঃ
শরীরকে সুস্থ্য বা ভালো রাখতে কতই কিছু না করা হয় যাতে করে আমাদের শীর ভালো
থাকে। শরীর যেখানে আছে সেখানে অসুস্থতাও আছে। কেউ অসুস্থ থাকলে তার নিজের ও
পরিবারের অনেক রকম সমস্যা সহ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়ে থাকে। পরিবার সহ সবার মনে
অশান্তি লেগে থাকে। তাই শরীর সুস্থ্য রাখতে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি নিয়মিত
ডাক্তারের কাছে গিয়ে চেকআপ করতে হবে।
শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখাঃ
সুস্থ থাকার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওজন যদি স্বাভাবিকের
চেয়ে বেশি হয় তাহলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে যায়। ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা দেখা দেয়। আবার অন্যদিকে যদি ওজন কমে যায় তাহলেও শরীরে রোগ হওয়ার
ঝুকি বেড়ে যায়।
তাই শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রত্যেকটি মানুষের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সুস্বাস্থ্যের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বিষয়ের সাথে জড়িত। যেমন-
- দেহের উচ্চতা অনুযায়ী ব্যক্তির ওজন।
- কোমরের মাপ তথা পেটে মেদের পরিমাণ।
- ২৫ বছর বয়সের পর থেকে ওজন কেমন বাড়ছে।
নিম্নে একজন সাধারন মানুষের উচ্চতা ও ওজন সীমা দেখাণো হলোঃ
উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন
বিএমআই কী?
বিএমআই এর পূর্ণরূপ হলো ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’। এটি একটি আন্তর্জাতিক
সূচক—যার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ওজন
কম, স্বাভাবিক না কি বেশি—সেটি নির্ণয় করা হয়।
বিএমআই বের করার নিয়মঃ
একজন ছেলে অথবা মেয়ের ওজন ও উচ্চতা ব্যবহার করে বিএমআই বের করা হয়।
ওজন মাপা হয় কেজিতে এবং উচ্চতা মাপা হয় মিটারে। মোট ওজনকে উচ্চতার
বর্গফল দিয়ে ভাগ করে বিএমআই নির্ণয় করা হয়।
আন্তর্জাতিকভাবে বিএমআই ১৮.৫ থেকে ২৪.৯ এর মধ্যে হলে উচ্চতা অনুযায়ী
ওজন সঠিক ধরে নেওয়া হয়।
বি এম আই | ফলাফল |
---|---|
১৮.৫ এর নিচে | আন্ডারওয়েট বা অস্বাভাবিক কম ওজন |
১৮.৫ থেকে ২৪.৯ | স্বাভাবিক ওজন |
২৫.০ থেকে ২৯.৯ | অতিরিক্ত ওজন |
৩০ অথবা তার বেশি | স্থুল বা Obese |
ছোট ছোট লক্ষ্য তৈরি করাঃ
প্রতিটি মানুষের জীবনে কিছু লক্ষ্য বা স্বপ্ন থাকে যেগুলো সে পূরণ করার
চেষ্টা করে। কোন লক্ষ্য পূরণ হয় আবার কোন গুলো পূরণ হয়না। বড় লক্ষ্য
পূরণের পাশাপাশি ছোট ছোট স্বপ্ন বা লক্ষ্য পূরণ হলে অনেক শান্তি পাওয়া
যায়। এমন কোন লক্ষ্য ঠিক করা উচিত নয় যা পূরণ করা সম্ভব নয়, তাতে
অশান্তি বেশি হয়। যেগুলো লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা সহজ সেগুলো পূরণ হলে মনে
অনেক প্রশান্তি পাওয়া যায়। তাই ছোট লক্ষ্য নির্ধারন সে অনুপাতে কাজ
করা।
নিয়ম করে ঘুমানোঃ
প্রতিদিন যে সময়ে ঘুমোতে যাবেন বা যে সময়ে ঘুম থেকে উঠবেন - তা যেন
পরিবর্তন না হয়৷ তবে ছুটির দিন আপনি একটু বেশি ঘুমোতে পারেন। তবে সেটাও
যেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হয়। নিজের শরীরকে নিয়ম মাফিক ঘুমানোর
অভ্যাস করান। বিশেষত রোজ অন্তত ৮ ঘণ্টা এবং খুব বেশি সমস্যা হলে অন্তত
৬ ঘণ্টার ঘুম নিশ্চিত করুন।
আরো পড়ুনঃ পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
ঘুমানোর সময় আশেপাশে কোনো বিরক্তিকর জিনিস যেমন ফোন বা মিডিয়া প্লেয়ার
বাজানো থেকে সকলকে বিরত রাখুন। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব,
গ্যাজেটনির্ভর আধুনিক জীবন অনেকের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়,
শরীর প্রচণ্ড ক্লান্ত কিন্তু ঘুম আসে না। রাত জাগা শরীরের জন্য
মারাত্মক ক্ষতিকর। রাতে ঘুম ঠিকমতো না হলে নানাবিধ শারীরিক রোগ দেখা
দিতে পারে। তাই রাতে প্রয়োজনমতো ঘুমাতে হবে। ভালো ঘুম হলে শরীর ও মন সব
ভালো থাকে। তাই রাতে ভালো ঘুমানো প্রয়োজন।
অ্যালকোহল পান না করাঃ
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর ক্ষতিকর প্রভাব
পড়ে ফুসফুসের ভারসাম্য নষ্ট করে। এটি আপনার শরীরে রক্তের শর্করার
মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। অ্যালকোহলের কারণে যানবাহন
চালানো দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে এবং এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হতে
পারে।
একটি জরিপে বলা হয়, প্রতি সপ্তাহে ১৮ ইউনিটের বেশি যারা পান করেন
তাদের আয়ু চার থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
অ্যালকোহল শরীরে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে। যেমন-
- অ্যালকোহল মদ্যপানের পর শরীরে প্রথম প্রভাব হলো মানসিক প্রভাব। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
- অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে, ফুসফুসের ভারসাম্য নষ্ট করে। এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বা অস্ত্রোপচারের কারণ হতে পারে।
- অ্যালকোহল রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এটি হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং রক্তচাপের সমস্যা উৎপন্ন করতে পারে।
টোব্যাকো বা তামাকজাতীয় জিনিস থেকে দূরে থাকাঃ
তামাক বা টোব্যাকো ব্যবহার থেকে দূরে থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এটি
ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, মুখের সমস্যা, দাঁতের সমস্যা,
গর্ভাবস্থা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তামাক ব্যবহার
থেকে দূরে থাকা সম্পর্কে আরও জানতে, আপনি আপনার স্থানীয় স্বাস্থ্য
কেয়ার প্রদানকারীর সাথে কথা বলতে পারেন।
ঘরে রান্না করা খাবার খাওয়া এবং বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা
আমরা বাইরে যে খাবার খাই যেমন প্যাকেজড বা রেডি ফুড এগুলো খাবারে
প্রচুর পরিমাণে লবণ, চিনি এবং প্রিজারভেটিভস থাকে যার ফলে আমাদের
অনেকেরই পেটের সমস্যা হয় এবং আবার অনেকের ভুড়ি বা মেদ বাড়তে থাকে।
আবার যদি আমরা রেস্তোরাঁর খাবার খায় তাহলে সেখানে থাকে প্রচুর পরিমাণে
তেল যা ট্রান্স ফ্যাটকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
আরো পড়ুনঃ মাথা ব্যাথা কি? মাথা ব্যাথার কারণ কি?
আবার অনেক সময় দেখা যায় খাবার যদি একাধিকবার জাল দিয়ে বা গরম করা হয়
তাতে পুষ্টিগুণ হারিয়ে যায় ফলে তাতে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে
নিয়ে আসে। প্যাকেজ ফুডে এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা শরীরের জন্য
খুবই ক্ষতিকারক বা মারাত্মক।
বাড়িতে রান্না করলে তাতে পরিমাণ মতো তেল থাকে এবং পরিমাণমতো সিদ্ধ করে
সেটা খাওয়া হয় যার ফলে আমাদের শরীর থাকে সুস্থ সবল এতে করে আমরা
মানসিকভাবে প্রশান্তিতে থাকি। তাই আমরা চেষ্টা করব সব সময় বাড়িতে
রান্না করা খাবার খাওয়ার জন্য। বাইরের খাবার যতটা এভোয়েড করা যায়
ততই ভালো।
স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়া
আমাদের শরীরকে সুস্থ, সুন্দর এবং সুঠাম রাখতে আমরা তিন বেলা খেয়ে
থাকি। কিন্তু এই তিন বেলার মাঝখানে আমাদের কিছু খাওয়া প্রয়োজন। হতে
পারে অফিসের কাজের ফাঁকে কিংবা ক্লাসের মাঝে মাঝে। আমরা কাজের ফাঁকে
কিংবা অফিস টাইমের মাঝখানে যখন চা বা কফি খায় তার সঙ্গে কিছু অনুসঙ্গ
খাবার খেলে আমাদের শরীরে এলার্জি ফিরে পায় এ ধরনের খাবার খাওয়া
আমাদের প্রত্যেকের দরকার।
দিনে তিনবেলা খেলে যে শরীর সুস্থ থাকবে তা কিন্তু নয়। অস্বাস্থ্যকর
খাবার খেলে আমাদের শরীরে দফারফা হয়ে যায়। ফলে আমাদের শরীরে অনেক ধরনের
অসুবিধা দেখা দেয় আবার না খেয়ে থাকলেও শরীরে ওজন অনেকটা বেড়ে যায়।
তাই আমাদের শরীরকে সুস্থ সুন্দর রাখতে কাজের ফাঁকে কিংবা ক্লাসের ফাঁকে
আমাদের কিছু হালকা জাতীয় খাবার যেমন- স্ন্যাকস খেলে আমাদের শরীরে
এনার্জি ফিরে পায়।
আমরা প্রতিদিন নিয়ম মেনে যদি স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাবার খেয়ে থাকি
তাহলে আমাদের পেট ওমন উভয় তৃপ্ত হয়। স্বাস্থ্যকর খাবার কিভাবে বাড়িতে
সহজেই বানানো যায় সেটা নিয়ে এখন আলোচনা করব। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস এ
ক্যালোরি কম থাকে এবং পুষ্টির পরিমাণ বেশি থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য
খুবই উপকারী।
আপনি কর্মক্ষেত্র কিংবা ক্লাসের ফাঁকে স্ন্যাকস খাবেন ভাবছেন, তাহলে ঘরে
বসেই তৈরি করে ফেলুন স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস যেখানে কম ক্যালোরি থাকে এবং
প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাবেন। অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খেলে ওজন বাড়তে
পারে ফলে আমাদের শরীরে অনেক রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
নিম্নে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস তৈরির নিয়ম আলোচনা করা হলোঃ
- মাখানাঃ এক ধরনের বাদাম যাতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যসম্মত কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। মাখানা ঘি দিয়ে ভেজে কাঁচের যারে ভর্তি করে রেখে আমরা কাজের ফাঁকে ফাঁকে বা ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে খেলে পরে আমাদের ক্ষুধা চাহিদাটা নিভৃত হয় এবং শরীরে এনার্জি বৃদ্ধি পায়।
- ছোলা ভাজাঃ ছোলা ভাজা অন্যতম একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। ছোলা পরিমাণ মতো অল্প আচে ভেজে নিতে হবে এবং এয়ার টাইট যারে এগুলো ভরে রেখে দিতে হবে। কাজের ফাঁকে কিংবা ক্লাসের ফাঁকে যখন আপনার সময় হবে তখন আপনি কিছু পরিমান ছোলা ভাজা খেয়ে নিতে পারে তাহলে আপনার চট জলদি খিদে মিটে যাবে এবং শরীরে এনার্জি ফিরে আসবে।
- ফলঃ আমরা জানি প্রচুর পরিমাণে ফলে পুষ্টিকর ভিটামিন এবং আমিষ রয়েছে। আমরা যদি মৌসুমী ফল বেশি করে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ হবে। কাজের ফাঁকে কিংবা ক্লাসের ফাঁকে আপেল বা কলা জাতীয় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যেতে পারে। আমরা যদি মৌসুমী ফল বেশি করে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীরের এলার্জি বৃদ্ধি পাবে।
- দুধ পান করাঃ আমরা সবাই জানি দুধ একটি আদর্শ খাবার।। দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন আমাদের এক গ্লাস করে দুধ পান করা প্রয়োজন।
- হার্ট বয়েল্ট ডিমঃ একটি হার্ড বয়েল্ড ডিমে রয়েছে ৬ গ্রাম প্রোটিন। সুতরাং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য আমাদের নিয়ম করে ডিম খাওয়া প্রয়োজন।
- বাদাম ও বীজের মিশ্রণঃ স্বাস্থ্যকর স্নাক্স তৈরির জন্য কোন রান্না এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং বীজ কিনে বাদামও বীজ মিশ্রণ তৈরি করে একটি কাঁচের জারে সংরক্ষণ করে আমরা সময়ে তা খেতে পারি। এই মিশ্রণ খেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য আমাদের পেট ভর্তি রাখে।
- চালভাজাঃ মোটা চাল ভেজে নিতে হবে আপনি চাইলে তার সাথে ছোলা ভাজা মিশিয়ে নিয়ে তৈরি করতে পারেন চাল ভাজা এবং ছোলা ভাজার এই মিশ্রণ। আপনি কাজের ফাঁকে যদি খান তাহলে আপনার খিদা মেটাতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে অনেকক্ষণ তরতাজা রাখবে। স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস একটি পুষ্টিকর খাবার যা খেলে নিজেকে সুস্থ সুন্দর এবং ফিট রাখে।
দাঁতের যত্নঃ
দাঁত হল মানব শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমাদের শরীরকে সুস্থ ও
সুন্দর রাখার জন্য দাঁতের গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। যদি আমাদের দাঁতের কোন
সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আমরা সবসময় অস্বস্তিতে ভোগে থাকি, ফলে আমাদের
সুস্থতা হারিয়ে যায়। দাঁতের যত্ন না নিলে আমাদের অনেক রকমের সমস্যা
হতে পারে, দাঁত ওঠা, দাঁতের শিরশির ভাব ব্যথা সহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া
জনিত অদ্ভুত রকমের অজানা রোগের জন্য। এমনকি দাঁতে ক্যান্সার পর্যন্ত
হতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের দাঁতের যত্ন নেওয়া উচিত।
মাঝে মধ্যেই বাইরে যাওয়া এবং স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের সাথে মেলামেশা করা
বাইরে যাওয়া এবং সামাজিক মেলামেশা করা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সম্পর্কের সাথে
সাথে সামঞ্জস্য সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে। সমাজে অন্যান্য মানুষের
সাথে যোগাযোগ করা আপনার জীবনে নতুন দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে
এবং আপনার সামাজিক নেটওয়ার্ক বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
কৃতজ্ঞ হওয়া
আমরা যে সুস্থ সবল সুন্দর আছি এর জন্য আল্লাহতালার কাছে আমরা চির
কৃতজ্ঞ জানাই। আল্লাহতালা যেন আমাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুস্থ, সবল,
সুন্দর রাখে সেই কামনা করি।
ক্ষমা করা
আমাদের চলার পথে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে আমরা ওঠাবসা, চলাফেরা করে
থাকি। আর ওঠাবসা চলাফেরা করার মাঝে অনেকের সাথে মনোমালিন্য ঘটে যায়।
ফলে আমরা মানসিকভাবে অশান্তিতে থাকি। আর এই অশান্তি দূর করার জন্য আমরা
যদি তাকে ক্ষমা করে দিতে পারি তাহলে দেখা যাবে মানসিকভাবে শান্তিতে
থাকতে পারবো এবং আমি সুস্থ থাকবো। তাই আমাদের সবার উচিত নিজেদেরকে
সুস্থ রাখার জন্য ছোটখাটো ভুল ভ্রান্তি গুলোকে ক্ষমা করে দেওয়া।
শান্ত থাকাঃ
জীবনে চলার পথে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ঘটন অঘটনের মধ্য দিয়ে দিন পার
করতে হয়। কখনো ভালো সময় যায় আবার কখনো খারাপ সময় যায়। আবার কখনো
বা কারো সাথে মনমালিন্য ঘটে যায়। ফলে আমরা সেই মনোমালিন্যের কারণে
আমরা সবসময় অশান্ত এবং অশান্তিতে থাকি যার ফলে আমরা সুস্থ থাকতে পারি
না।
তাই সেই সমস্ত অশান্তিকে দূরে রেখে আমরা যদি শান্ত থাকতে পারি তাহলে
আমাদের জীবন হয়ে ওঠে সহজ, সরল এবং সুন্দর। তখনই আমরা সুস্থ থাকতে
পারি। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত কোন অপ্রিতিকর ঘটনা মন থেকে দূরে
সরিয়ে রাখা যাতে করে আমরা শান্তিতে থাকতে পারি।
ইতি বাচক চিন্তা করা
আমাদের চলার পথে আমরা প্রতিটি বিষয়ে সহজভাবে না নিয়ে নেতিবাচকভাবে
নিয়ে থাকি যার ফলে আমরা মানসিকভাবে অশান্তিতে বসবাস করি। তাই আমাদের
প্রত্যেকটি বিষয়ে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা না করে সেটাকে যদি আমরা
ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করি তাহলে দেখা যাবে যে আমাদের জীবনটা সুন্দর
হয়ে উঠেছে। সকল বিষয়ে আমরা যদি ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করতে পারি তাহলে
আমরা সুস্থ সুন্দর থাকতে পারবো।
তর্ক না করাঃ
জীবনে চলার পথে আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মানুষের সাথে তর্কে বিতর্কে
লিপ্ত হয়ে পড়ি। ফলে আমাদের পরিবার, পরিবেশ, সামাজিক, পারিবারিক
বিষয়ে অশান্তি দেখা দেয়। আর তর্ক করা কখনো ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসে
না। তাই আমরা তর্ক না করে তাকে সহজ সরল ভাবে বুঝিয়ে বললে বিষয়টা
সুন্দর হয়।
সমালোচনাকে কাজে লাগানো
সমালোচনা কখনো ভালোর আবার কখনো খারাপের জন্য হয়ে থাকে। নেতিবাচক
সমালোচনা শোনার সময় নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে দেখুন তাতে কতটা সত্যতা
রয়েছে। ঠাণ্ডা মাথায় পুরো পরিস্থিতি সামলাতে হবে। রেগে গেলে কিন্তু
নিজের ইমেজের ক্ষতি করবেন।
অন্যের মতামত থেকে শিক্ষা নিন। বুঝতে চেষ্টা
করুন আপনার কাজের ভুলগুলো কীভাবে শোধরাতে পারবেন। কীভাবে নিজের কাজে
উন্নতি ঘটাবেন সে ব্যাপারে একটা ধারণা সমালোচককে দেয়ার চেষ্টা করুন।
সমালোচনাকে ইতিবাচক ভাবে নিলে দেখবেন আপনার উপকার হচ্ছে।
প্রকৃত বন্ধুদের সঙ্গে থাকা
একজন প্রকৃত ভালো বন্ধু অভিভাকের মতন। পরিবারের কোনো সদস্য বিপথে,
অন্ধকারে ধংসের দিকে হারাতে শুরু করার সময় যে সমস্যাগুলো প্রথমে দেখা
যায় সেগুলো পরিবারের আগে অন্য কেউ সচারচার লক্ষ্য করতে পারে না। তবে
কিছু কাছের প্রিয়বন্ধু উপলদ্বি করতে পারে। জীবনে সুখ দুঃখের অনেক কথাই
বন্ধুর সঙ্গে ভাগাভাগি করা হয়, যে কথাগুলো হয়তো পরিবারে কখনোই বলা
হয়নি।
আমি মনে করি একজন প্রকৃত ভাল বন্ধুই হতে পারে জীবন পরিবর্তন করার জন্য
যথেষ্ট। জীবনে শ্রেষ্ঠ বন্ধুর দাবি না করে একজন ভালো বন্ধু হওয়া প্রয়োজন।
জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া হবে তখনই যখন কোনো বন্ধুর মানসিক দিকসহ সব ধরনের
বিপদে-আপদে ছুটে এসে পাশে থাকতে পারবে।
হিংসা বন্ধ করাঃ
হিংসা করার ফলে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবস্থা ভুলে যেতে পারে।
হিংসা করার পরিণামে মানসিক সমস্যা, শারীরিক ক্ষতি, এবং সামাজিক
সম্পর্কের সমস্যা, পরিবারের সম্পর্কের সমস্যা, পেশাদার সমস্যা এবং
অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। হিংসা কখনো ভালো কিছু বয়ে আনতে
পারেনা। তাই সমস্ত রকমের হিংসা ত্যাগ করলে দেখবেন আপনি মানসিকভাবে
শান্তি পাবেন। নিজেদের সুখের জন্য সকল হিংসা বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকা।
অসহায় মানুষকে নিয়ে চিন্তা করাঃ
সুস্থ মন ,সুস্থ দেহ এরই নাম স্বাস্থ্য। সুস্থ থাকার জন্য আমরা সবাই
অনেক কিছু করে থাকি। তাতে কি সবাই সুখে থাকি, না সুখে থাকি না । সুখে
থাকার জন্য আমরা যদি একবার অসহায় মানুষের দিকে তাকায় তাহলে দেখবো তারা
কি করুণ অবস্থায় আছে। আপনি যদি কোন অসহায় মানুষের উপকার করতে পারেন
তাহলে দেখবেন আপনি কতটা শান্তি পাচ্ছেন। মন শান্তিতে থাকলে মনে করবেন
আপনি সুস্থ আছেন।
নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা
আমরা সবাই নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করি, যেমন আমাদের কাজের দক্ষতা,
ব্যক্তিগত গুণাবল, শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্বাস্থ্য, আর্থিক অবস্থা,
সামাজিক সম্পর্ক, ইত্যাদি। এই তুলনা আমাদের নিজের স্বাভাবিক প্রকৃতি
সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। ধরা যাক, আপনি একটি নতুন কার্যক্রমে যোগ দিতে চান।
আপনি নিজেকে একটি
প্রশ্ন করতে পারেন, আমার এটি করতে কতটুকু সময় লাগবে? এবং আপনি অন্যের
সাথে তুলনা করতে পারেন যে তাদের করতে কতটুকু সময় লাগবে। এই তুলনা আপনার
নিজের সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে এবং আপনার কার্যক্রমের প্রবলেমসলভ
সম্পর্কে আপনার মন্তব্য করতে সাহায্য করবে।
সকালের নাস্তা খান রাজার মতো, দুপুরের খাবার খান প্রজার মতো আর রাতের
খাবার খান ভিক্ষুকের মতো”। প্রবাদটির নিগুঢ় অর্থ হচ্ছে, আমাদের
সারাদিন কাজ করার যে শক্তি, তা সকালের নাস্তা থেকেই অর্জিত হয়ে থাকে।
তাই সকালের নাস্তা খেতে হয় পেট পুরে। দুপুরবেলায় তার চেয়ে কিছু কম
আর রাতে খেতে হয় সবচেয়ে কম।
গ্রীন টি পানঃ
সকাল বেলায় খালি পেটে গ্রীন টি পান করলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
তাছাড়া গ্রীন টিতে রয়েছে কিছু ভেষজ গুণ। তবে বিকেলের পর যেকোন ধরনের
চা পান থেকে বিরত থাকুন। নইলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
প্রার্থনা করাঃ
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছে সারাদিন চলার
জন্য একটি দিকনির্দেশনা প্রার্থনা করুন। এতে নিজের উপর বিশ্বাসটা
জোরালো হবে। দেখবেন আপনি চাইলেও ভুল পথে পা বাড়াতে পারছেন না। সময় সব
কিছুকে ধুয়ে-মুছে দেয়। পরিস্থিতি যত খারাপ বা ভালই হোক না কেন,
সময়ের সাথে সাথে তা পরিবর্তিত হয়। আপনার কর্তব্য শুধু উদ্দীপনা ধরে
রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা।
ধীরে খাবার গ্রহণ করা
ধীরে খাবার গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি আপনার খাদ্য
প্রণালী ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ধীরে খাবার গ্রহণ করলে আপনি
কখনো অপুষ্টিতে ভুগবেন না। ধীরে খাবার গ্রহন আপনার শরীরের প্রয়োজনীয়
পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে সাহায্য করতে পারে।
ধীরে খাবার গ্রহণ করলে ক্যালরির হিসাব-নিকাশ বেড়ে যাওয়ার আগে আপনার
ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাড়াহুড়া করে খাবার গ্রহন করলে অনেক সময
বিপত্তি ঘটে। ফলে গলায় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের
সবার ধীরে খাবার গ্রহন করা উচিত।
নিজেকে সামাজিক করে তোলা
আপনি প্রচুর মানুষের সাথে মেলামেশা শুরু করে দিন। বরং চেষ্টা করুন
আপনার আশেপাশের মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখার। এতে আপনার মানসিক
স্বাস্থ্য সুন্দর থাকবে। তাছাড়া মানুষের সাথে মেলামেশার ফলে ঘুরাঘুরি
বা অন্যান্য কাজের ফলে আপনি ব্যস্ত থাকবেন৷ এতে বিভিন্ন মানসিক ব্যাধি,
বিষণ্ণতা কিংবা স্ট্রেস হরমোন নির্গত হওয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
মিষ্টি বা চিনি কম খাওয়াঃ
চিনি মানুষের অনেক উপকারে আসে। পাশাপাশি আবার অনেক ক্ষতিও করে থাকে।
কেন আমরা চিনি কম খাব, তার কারণ- চিনি কম খাওয়াতে ওজন কমাতে সাহায্য
করে, কারণ এটি অতিরিক্ত ক্যালরি প্রদান করে না। চিনি কম খাওয়াতে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, কারণ এটি খুব দ্রুত শরীরে শক্তি জোগায় এবং
রক্তের শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণ করে।
চিনি কম খাওয়াতে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, কারণ এটি দাঁতের প্লাক
গঠন কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
নয়, যেমন টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি হতে
পারে। উচ্চমাত্রার ক্যালরিযুক্ত খাবারের সাথে চিনি খাওয়া হলে তা
ক্ষতির কারন হতে পারে।
জীবনে বৈচিত্র্য আনাঃ
বৈচিত্র্য আনার প্রয়োজন অনেক সময় আমাদের জীবনে আসে। এটি আমাদের
মানসিক স্বাস্থ্য, সৃষ্টিশীলতা, এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য
গুরুত্বপূর্ণ। বৈচিত্র্য আমাদের নতুন দিকে দেখানোর সুযোগ তৈরি করে এবং
আমাদের জীবনে আরও রঙিন করে। এটি আমাদের সম্পর্ক, শিক্ষা, পেশা,
সাহিত্য, কলা, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করতে
সাহায্য করে। বৈচিত্র্য আমাদের জীবনে আরও মজার করে এবং আমাদের
সৃষ্টিশীলতা বৃদ্ধি করে।
মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করা
মোবাইল ফোন আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি আমাদের
সাথে যোগাযোগ, মনোরঞ্জন, কাজ-কর্ম, সামাজিকীকরণ, শিক্ষা, গবেষণা,
অনলাইন শপিং, ব্যাংকিং, টেক্সট এবং নোট লেখা, টিভি দেখা, ইনকাম
এপ্লিকেশন ব্যবহার, রিচার্জ এবং বিল পেমেন্ট, রিমোট ওয়ার্কিং, খবর পড়া,
ভিডিও কলিং, মাল্টিটাস্কিং, গেমিং, জিপিএস (GPS), টর্চলাইট (Flash
light) সহ অনেক কাজ সহজে করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন
এছাড়া, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি হতে পারে,
যেমন মোবাইল ফোনের বিকিরণ, অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে উষ্ণতা, মানসিক
অবক্ষয়, নেশা, মোবাইল হারানোর ভয়, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের
ফলে শারীরিক, মানসিক ক্ষতি, সামাজিক অবক্ষয়, মোবাইল ফোনের নেশা হয়ে
যায়।
যার ফলে অনেক সময় বাচ্চারা এ্যাবনরমাল হয়ে যায়। অনেক সময়ে চোখে সমস্যা
দেখা দেয়। আর তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার না করায়
ভালো।
মেডিটেশন করা
যেকোনো লক্ষ্যে অটুট থাকা অনেক বেশি জরুরী। বেশিরভাগ মানুষই নিজের
লক্ষ্য স্থির থাকতে পারে না। একবার ব্যর্থ হলে চেষ্টা ছেড়ে দিয়ে নতুন
লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং প্রতিনিয়ত অস্থিরতায় থাকে। মনকে শান্ত করতে
মেডিটেশন করতে পারেন। মেডিটেশন আমাদের ধৈর্য বাড়ায় ও দীর্ঘ সময় কাজে
মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন মেডিটেশন করার অভ্যাস গড়ে নিতে
পারেন।
লেখকের শেষ মন্তব্য
আপনার স্বাস্থ্য অনেক বিষয়গুলোর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, যেগুলোর উপর
আপনার কোনো হাত নেই, যেমন আর্থিক অবস্থা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
পাওয়া বা না পাওয়া, ইত্যাদি। কিন্তু, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, এই
আর্টিকেলে তুলে ধরা পরামর্শগুলোর মধ্যে অন্ততপক্ষে কিছু পরামর্শ আপনি
কাজে লাগাতে পারেন।
নিজেকে সুস্থ রাখার ৩১টি সহজ উপায় এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে
অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করে দিবেন।
aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url