মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক জেনে নিই

মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক সম্পর্কে আপনি অনেক খোঁজাখুজি করেছেন কিন্তু আপনি ভালো কোন উত্তর খুঁজে পাননি। আজ আমি এ বিষয় সহ মাদক এবং তামাকের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক সম্পর্কে জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।


এখানে আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন- ধুমপানের ক্ষতিকর দিক সহ গুরুত্তপূর্ণ তথ্য জানতে আমার আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক

ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। ধুমপানের কারণে বহুমানুষ সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে অবস্থান করছে। মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক সম্পর্কে আমরা এ আর্টিকেল থেকে জানব। ধুমপান বা তামাকে যে মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তরিত জানব।

মাদক এবং তামাকের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিই

মাদক হলো এমন একটি দ্রব্য গ্রহণ করলে মানুষের শারিরীক ও মানসিক অবস্থার নেতিবাচক বা খারাপ পরিবর্তন হয় এবং ঐ দ্রব্যর প্রতি মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি দ্রব্যটি গ্রহণের ফলে তা খাওয়ার আকাঙ্খা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে এমন দ্রব্যকে বলা হয় মাদকদ্রব্য। মাদকদ্রব্যর প্রতি নেশা বা আসক্তি কে মাদকাসক্তি বলে। মাদক দ্রব্য অনেক রকম হয়। 
যেমন-তামাক, সিগারেট, বিড়ি, মদ, গাঁজা, ভাং, আফিম, চরস, হেরোইন, মারিজুয়ানা, মরফিন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ইত্যাদি। তামাক বা ধূমপান আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি কারে। এটা আমাদের শরীরের পা থেকে মাথা পর্যন্ত সব অঙ্গেরই ক্ষতি করে থাকে। তারপরও বহু মানুষ ধূমপানের শিকার হয়। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও ভেতরে ভেতরে মানুষ ঠিকই তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো নিঃশেষ হয়ে যেতে থাকে।

এপ্রিল ২০২৪ এর আপডেট তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে প্রতিবছর তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় এবং বছরে ৬১ হাজার শিশু তামাকের পরোক্ষ ক্ষতির শিকার হয়। এতে কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন আরও ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ।

তামাকের ব্যবহারঃ তামাক হচ্ছে একটি অত্যন্ত নেশাদায়ক দ্রব্য। যা খেলে মানুষ নেশায় আক্রান্ত হয়। দুই ভাবে মানুষ তামাক ব্যবহার করে থাকে। একটি হচ্ছে ধোয়া হীন তামাক যা, জর্দা গোল, সাদা পাতা, ইত্যাদি। আরেকটি হচ্ছে ধোঁয়াযুক্ত তামাক যা সিগারেট, বিড়ি, চুরোট হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এইসব নিশা দ্রব্য সবই আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক 

আমরা সবাই জানি ধুমপান না বিষ পান। তারপরেও আমরা তামাক সেবন কিংবা ধূমপান এর ক্ষতিকর ও বিপদজনক অভ্যাসের মধ্যে প্রতিনিয়ত ধাবিত হচ্ছি। ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে কেউ জানে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। ধূমপান ব্যবহারের ফলে আমরা দিন দিন মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছি।


ধূমপান ব্যবহারে যে শুধু যারা ধূমপান করে তারাই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে তা নয় বরং এর আশেপাশে থাকা অধুমপায়ীরাও সমানভাবে রোগাক্রান্ত এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের সকলকে  ধূমপান এবং তামাক দ্রব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে স্বাস্থ্যের নানা রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক সম্পর্কে নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

ক্যান্সারঃ ধূমপানে বিষ পান জানার পরেও আমরা প্রতিনিয়ত ধূমপান করে থাকি। আর এই ধূমপানে হাজার হাজার ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ক্যান্সার সৃষ্টি করে। ধূমপানের কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় যেমন গলা, খাদ্যনালী, মুখ, ফুসফুস, পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে,  অধুমপায়ীদের চেয়ে ধূমপায়ীদের ফুসফুসে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ বেশি। আমরা যে তামাক খায় সে তামাকের মধ্যেও রয়েছে কারসিনো জেনিক পদার্থ যা মানবদেহের ডি এন এর ক্ষতি করে এবং ক্যান্সারের কোষের বিকাশ ঘটায়।

শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাঃ ধূমপান বা তামাক সরাসরি ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। ফুসফুসের ক্ষতি করে। ফুসফুসের বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে যেমন - এম ফাইসিমা, দীর্ঘস্থায়ী ব্রংকাইটিস, এবং সিওপিডির মত শ্বাসযন্ত্রের জটিল সমস্যাগুলো ধূমপান থেকে হয়ে থাকে। ধুমপান হাঁপানি রোগীর জন্য খুবই মারাত্মক। যারা ধূমপান করেন তাদের যক্ষা এবং ফুসফুসের ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

রক্তনালী ও হৃদরোগঃ ধূমপানের ফলে রক্ত ও রক্তনালীতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শরীরের  ক্ষতিকর পদার্থ নিকোটিন যা শরীরের রক্তনালিকে চিকন করে দেয় এবং রক্তনালীর কোষগুলোকে নষ্ট করতে থাকে। রক্তনালীর মধ্যে ফ্ল্যাটেলেট জোমে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ যারা অধুমপায়ী তাদের চেয়ে যারা ধূমপান করে তাদের দ্বিগুণ।

কোলেস্টেরলঃ ধূমপানের ফলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এবং প্রায় লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে কমে যায় ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা। এতে করে রক্তনালীতে চর্বি জমে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক,  স্ট্রোক ডিজিজ,  গ্যাংগ্রিন পায়ে পচনশীল রোগের মত অনেক রোগ।

পরিবর্তন এর উপর প্রভাবঃ অত্যাধিক ধূমপান ব্যবহারের ফলে মানুষের দন্ত ক্ষয়, ক্ষুধামান্দা, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, হজমের সমস্যা এবং বদহজমের সমস্যা হয়ে থাকে। আমরা যে সিগারেট খাই সিগারেটের নিকোটিনের ধোয়া খাদ্যনালির দরজা কে অকার্যকর করে দেয়। ফলে এসিডি আরো বেড়ে যায় এবং খাদ্যনালির প্রদাহ তৈরি হয়।

গর্ভবতীর সমস্যাঃ ধূমপান গ্রহণের ফলে যে সমস্ত মহিলারা গর্ভবতী রয়েছেন তাদের অনেক রকমের ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে গর্ভে সন্তানের অকাল গর্ভপাত বা ক্ষতি হয়ে যায়। গর্ভবতী মায়েরা যারা ধূমপান করেন তাদের অনেক সময় বাচ্চা হওয়ার অপরিপক্ক অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে যা অধুমপাই নারীদের চেয়ে অন্তত তিনগুণ বেশি। আবার জন্মের সময় নানাবিধ সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং অনেক সময় মৃত্যুর কারণও হতে পারে।

নিকোটিনের আসক্তি বাড়ায়ঃ মাদক এমন একটি খাদ্যদ্রব্য যা খেলে আসক্তি দিন দিন বাড়তেই থাকে। আর তা গ্রহণের ফলে রক্তের মাধ্যমে নিকোটিন চলে যায় মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে। নিকোটিন  যেটা ব্রেইন থেকে ডিপার্টমেন্ট এবং অন্যান্য নিউরো ট্রান্সমিটার কে মুক্ত করতে সাহায্য করে। তামাক গ্রহণের ফলে মানুষের শরীরে এক রকম ভালো লাগা প্রকাশ ঘটায় এবং নিয়মিত ব্যবহার করে আসক্তি বা নেশায় পরিণত হয়। ফলে ধূমপান ত্যাগ করা আমাদের কঠিন হয়ে পড়ে।

প্রজনন সমস্যাঃ ধূমপান এমন একটি জিনিস যা গ্রহণের ফলে নারী-পুরুষ উভয়ের প্রজনন ক্ষমতাকে বিরূপভাবে প্রবাহিত করতে পারে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে প্রজনন সমস্যা গর্ভাবস্থায় জটিলতা, অকাল জন্মের ঝুঁকি, কম ওজনের সন্তান জন্মদান এরকম আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার অত্যাধিক ধূমপানের কারণে পুরুষের যৌনাঙ্গ বা জনপ্রিয় কলাফে অক্ষমতা বা একে স্টাইল ডিসফাংশন এবং শুক্রাণুর গুণগত মান গ্রাস করে। যার ফলে অনেক সময় বাচ্চা জন্মদানের ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে।

অন্যান্য জটিলতাঃ ধূমপানের ফলেও অনেক মানুষের চোখে কম বয়সে ছানি পড়তে পারে। ধূমপানের ফলে শ্রবণ শক্তি কমে যায়, শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। ধূমপান আমাদের ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে বার্ধক্যকে ত্বরানিত করে ফলে আমাদের ত্বক বিবর্ণ হয়ে যায়। অকালে আমরা বার্ধক্য হয়ে যায়। আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়মিত ধূমপান করার ফলে সংক্রমণ এবং অসুস্থতাকে দীর্ঘায়িত করে।

আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতিঃ ধূমপান গ্রহনের ফলে তো আমরা যেমন শারীরিক ক্ষতি করি, তেমনি আমাদের আর্থিক এবং সামাজিক অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে। যেমন বিড়ি বা সিগারেট কেনার খরচ এবং স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যয়ের কারণে ধূমপান ব্যক্তির উপর উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্রভাব পড়ে। ফলে ধূমপান ব্যক্তিরা স্বাভাবিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধূমপানকে সরকার পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে।

ই- সিগারেটঃ ই- সিগারেট হচ্ছে মূলত সিগারেটের একটি বিকল্প। এটা সিগারেটের মতো দেখতে না হলেও সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে তরুণ সমাজ এই সিগারেটে আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে, এই সিগারেট ফ্যাশনেবল হওয়ায় ব্যাটারী চালিত এ যন্ত্রটিতে প্রায় টান দিতে দেখা যায়। অনেকে আবার সিগারেট ছাড়ার জন্য ই সিগারেট ব্যবহার করে থাকেন।

কিন্তু এটিতেও প্রচুর পরিমাণে নিকোটিন প্রোফাইলে গ্লাইকল অথবা ভেজিটেবল গ্লিসারিন এবং সুগন্ধি মিশ্রিত থাকে যার জন্য মানুষ ই- সিগারেটের বেশি আসক্ত হচ্ছে। এই সিগারেটের নিকোটিন থাকায় সেখানেও তারা নেশাগ্রস্তর দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে । ই- সিগারেট ব্যবহার করার ফলে রাসায়নিক পদার্থ ফুসফুসের রোগ এবং শ্বাসযন্ত্রে ইনফেকশন ঘটাতে পারে।

ই-সিগারেটে রয়েছে ক্যান্সার হওয়ার মতো অনেক উপাদান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাক নিয়ে গবেষণায় বলেন যে, ই- সিগারেটকে সু চিন্তিতভাবে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ধুমপান বা তামাক সম্পর্কে ইসলাম কি বলে 

তামাক বা ধূমপান একটি ক্ষতিকারক, অপবিত্র ও দুর্গন্ধময় বস্তু ও খারাপ এটা সার্বজনীন স্বীকৃত। এ ব্যাপারে দুনিয়া সুস্থ বিবেকবান সম্পন্ন মানুষ একমত কোন স্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ও দ্বিমত পোষণ করেননি। চুরোট, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদি সেবনকারীর জন্য কোন প্রকার পুষ্টির যোগান দেয় না, ক্ষুধাও নিভৃত করেনা। ইসলামে তামাকের ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন ”তিনি তোমাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করেন অবৈধ
বস্তুগুলোকে হারাম করিয়ে দেন”। (সূরা আল আরাফ: ১৫৭)। তামাক সেবনে মানুষের জীবন জটিলতর হয়, দেহের অনেক রকমের ক্ষতি হয়, মানুষ তিলে তিলে নিজের জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়।

এ ব্যাপারে আল্লাহ পাক সতর্ক করে বলেন, তোমরা নিজদিগকে নিজেরা ধ্বংসের পথে নিক্ষেপ করো না। (সূরা আল বাকারা ১৯৫)। তিনি আরো বলেন, তোমরা একে অন্যকে হত্যা করো না। ( সূরা নিসা ২৯)। ধূমপান গ্রহনের ফলে মানুষের অর্থনৈতিক অপচয় ঘটে। আর ইসলাম অপচয় ও অপব্যয়ীকে সমর্থন করে না।

ধূমপান ছাড়ার ১০ টি সহজ উপায়

ধূমপানে বিষ পান। আর বিশ পানে অবধারিত মৃত্যু। আর এ মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সবাইকে ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য  ত্যাগ করতে হবে। তাহলে আমাদের পক্ষে সুস্থ থাকা সম্ভব। শুধু আমি সুস্থ থাকব তাই নয় আমার পাশাপাশি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সব সুস্থ থাকবে। তামাক জাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ধূমপানের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
 আমরা জেনে নিই কিভাবে ১০ টি উপায়ে ধূমপান ছেড়ে দেওয়া যায়।


  • ধূমপান ছাড়ার প্রথম এবং প্রধান কাজ যেটি হল সেটা হচ্ছে প্রতিজ্ঞা করা। আপনি যদি সঠিকভাবে প্রতিজ্ঞা করতে পারেন তাহলে আপনার পক্ষে ধূমপান ছাড়া সম্ভব। প্রতিজ্ঞার পাশাপাশি আপনার কাছে থাকা সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্য সেটা দূরে সরিয়ে রাখা অথবা ডাস্টবিনে সরিয়ে ফেলতে হবে।
  • প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী আপনি একদিন ধূমপান না করে এরপর এর পার্থক্যটা আপনি বের করার চেষ্টা করুন। তাহলে বুঝতে পারবেন কেন আপনাকে ধূমপান ছেড়ে দেয়া দরকার।
  • এভাবে আপনি একদিন, দুইদিন, তিনদিন ধূমপান থেকে দূরে থাকা চেষ্টা করুন। এক সময় দেখবেন যে আপনার এই অভ্যাসটি গড়ে উঠবে ধূমপান না করার জন্য।
  •  যারা একসময় ধূমপান করতো বর্তমানে ছেড়ে দিয়েছে। আপনি তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং তাদের কাছ থেকে জানুন যে তারা এখন ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরে কি অবস্থায় আছে তারা তাদের স্বাস্থ্যগত কি পরিবর্তন এসেছে।
  • ধূমপান ছাড়ার জন্য সব সময় মনে রাখতে হবে যে, আপনার যে সকল  বন্ধুরা ধূমপান করে তাদের সংঙ্গ এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ধূমপান করার ফলে আপনার যে পরিমাণ প্রতিদিন আর্থিক ক্ষতি হতো সেই টাকার হিসাব বের করে দেখা যে আপনি প্রতিদিন কত টাকা খরচ করেন। তাহলে আপনার ধূমপান ছাড়তে খুব সহজ হবে।
  • যে সমস্ত জায়গায় সাধারণ মানুষ ধূমপান করে সে সমস্ত জায়গা অথবা ধূমপান কর্ণার পরিত্যাগ করুন বা দূরে থাকুন।
  •  ধূমপান ছাড়ার জন্য আমাদের দেশে ধূমপানবিরোধী বা তামাক বিরোধী আন্দোলন হয় বা স্বাস্থ্য সচেতন অনেক বই পাওয়া যায় সেগুলো আপনি পড়তে পারেন। তাহলে ধূমপান ছাড়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।
  • আপনার যে সময় ধূমপান করতে ইচ্ছে করবে সে সময় আপনি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকুন অথবা রাস্তায় হাটুন। তাহলে দেখবেন আপনার ধূমপানের চাহিদা কমে যাবে বা থাকবে না।
  • ধূমপান ছাড়ার পর অভ্যাসবশত আপনার ধূমপান করতে ইচ্ছে করবে কিন্তু আপনি ওই সময় চুইংগাম অথবা আদা বা বিভিন্ন ধরনের জিনিস আপনি মুখে নিয়ে চিবাতে পারেন। তাহলে দেখবেন ধূমপানের প্রতি আপনার যে আসক্তি সেটা কমে যাবে।
  • উপরোক্ত নিয়মগুলো পালন করার পরেও যদি দেখেন আপনার সমস্যা হচ্ছে তাহলে আপনি সর্বশেষ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে কাউন্সিলিং এ সহায়তা নিয়ে ধূমপান ত্যাগ করতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

সিগারেট আজকের দিনে কারো কাছে ফ্যাশন, কারো কাছে চরম বিরক্তিকর। তরুণ, যুবক, বৃদ্ধ এমনকি ক্ষেত্রবিশেষ কিশোরীরাও সিগারেটের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। সিগারেটের পক্ষে বিপক্ষে নানা যুক্তি থাকলেও সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা আজ সর্বজন স্বীকৃত। শুধু যারা ধূমপান ব্যবহার করছে তাদের ক্ষতি হয় তা না এদের আশেপাশে যারা থাকে তাদেরও সমভাবে ক্ষতি হচ্ছে। 

মাদক বা তামাকের ক্ষতিকর ১০টি দিক সম্পর্কে যদি আমরা ভালো করে জানতে পারি এবং তা মানতে পারি তাহলে আমাদের পরিবার, সমাজ এবং দেশ ভালো থাকবে। আসুন আমরা সবাই ধূমপান তথা সব ধরনের তামাক সেবন বর্জন করি এবং আমাদের জীবনকে সুস্থ সুন্দর সাবলীল ভাবে গড়ে তুলি। 

এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url