পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার সম্পর্কে আপনি অনেক খোঁজাখুজি করেছেন কিন্তু আপনি ভালো কোন উত্তর খুঁজে পাননি। আজ আমি পেট ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার সম্পর্কে জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।


এখানে আরো বেশ কিছু বিষয় যেমন- পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও ঘরোয়া প্রতিকার, , পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথা কমাতে আমাদের যা যা করণীয় সহ গুরুত্তপূর্ণ তথ্য জানতে আমার আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

সূচিপত্রঃ পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার

.
পেট এমন একটা মহাশয় যা খাওয়াবে তাই সয়। তাই আমাদেরকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে যে, আমরা যেন বাইরের খাবার বেশি না খায়। বাইরের খাবার বেশি খেলে পেটের সমস্যা খুব বেশি আকারে দেখা দেয়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকা উচিত। এখানে পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার, ঘরোয়া চিকিৎসা, তলপেট ব্যথার কারণ, পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আরোচনা করা হলো।

পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার

পেট পুরে খেতে আমরা সকলেই পছন্দ করি হোক সেটা বিয়ে বাড়ির কোন অনুষ্ঠান বা কোনো রেস্টুরেন্ট। আর খাওয়ার আনন্দটা তখনই নষ্ট হয় যখন পেটে ব্যাথা দেখা দেয়। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত পেটকে সুস্থ রাখা। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হজমের ক্ষমতাও বাড়াতে হবে। আসুন আমরা এবার জেনে নিয়ে পেট কাকে বলে।


যুক্তরাজ্যের ক্লিপ ল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, পেট হল পাঁজর ও শ্রেণীর মধ্যবর্তী জায়গা। এ জায়গাটা হল আমাদের পাকস্থলী, যকৃত, পিত্তথলির অগ্নাশয় ক্ষুদ্রান্ত, বৃহতন্ত্রের বাড়ি এগুলোকে একসাথে পাচনতন্ত্র বলা হয়।

পেট ব্যথার কারণঃ

পেট ব্যথা প্রত্যেকটা মানুষের রয়েছে কারো সাধারণ ব্যথা কারো। কিন্তু এই ব্যথাগুলো পেটের ঠিক কোন জায়গায় হচ্ছে সেটা জানা খুব জরুরী এটার উপরে তলপেটে নাভির নিচে না নাভির চারপাশে এটা নির্বাচন করে ডাক্তারেরা সঠিক চিকিৎসা নির্ধারণ করে থাকেন। পেটের ব্যাথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে যা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

গ্যাসের ব্যথাঃ  আমরা যে খাবারগুলো খাই স্বাভাবিকভাবে সেখান থেকে গ্যাস উৎপন্ন হয়। আবার স্বাভাবিক নিয়মে গ্যাস নির্গত হয়ে যায়। কিন্তু যদি আমরা আশ যুক্ত খাবার, ডাল, সবজি যত জাতীয় ইত্যাদি খাবার বেশি করে খায় এবং তা হজম করতে সময় বেশি নেয় ফলে গ্যাস বেশি করে উৎপন্ন হয়। এ ধরনের খাবার পরিপাকতন্ত্রের বেশি গ্যাস উৎপন্ন করে। 
ফলে পেটে গ্যাস জমতে থাকে পরবর্তীতে এটা যন্ত্রণা আকারে বের হয়ে আসে। সময়মতো চিকিৎসা না করলে ধীরে ধীরে তা জটিল আকার ধারণ করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তার প্রতিকার করা এবং আমাদের খাদ্য অভ্যাসের উপর বিশেষ নজর রাখা।

বদহজমের কারণে ব্যথাঃ  আমরা সাধারণত যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি পরিপাকতন্ত্র সহজে হজম করে থাকে। কিন্তু গুরুপাক খাবার বা বেশি খাবার যদি আমরা খেয়ে ফেলি তখন পরিপাকতন্ত্র সেগুলো আর সহজে হজম করতে পারে না। ফলে আমাদের শরীরে অস্বস্তি, পেটে যন্ত্রণা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরানো ইত্যাদি উপসর্গ হলো দেখা দেয়। খাবারগুলো যেন সহজে হজম করতে পারে সে ধরনের খাবার খাওয়া উচিত। যদি আমরা বেশি বেশি বদহজমের শিকার হয় তখন অবশ্যই আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

আলসারের ব্যথাঃ  আমরা পরিমাণ মতো খাবার খাই । সেটা যদি পরিমাণ মতো না হয় বা সঠিক খাবার না হয় এবং অতিরিক্ত খাবার হয় তাহলে আমাদের শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় । তার মধ্যে আলসার একটি হচ্ছে অন্যতম। আলসার হলো পাকস্থলী এবং ক্ষুদ্রান্তের গায়ে ক্ষত যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে
  •  দীর্ঘ সময় যদি পেট খালি থাকে
  • নিয়মিত মানসিক দুশ্চিন্তা হয়
  • মসলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া
  • পাকস্থলীর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ
  • দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথা
  • আলসারের বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে তার মধ্যে হলঃ
  • পেট কামড়ানো
  • টক ঢেঁকুর উঠা
  • বুকের উপরের দিকে মাঝে মাঝে ব্যথা করা
  • পেটের মাঝখানে বুক জ্বলা অনুভব করা
এ ধরনের সমস্যার জন্য অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করলে আলসার ভালো হয়।

অম্বলের ব্যথাঃ  আমরা ছোট থেকে শুরু করে প্রবীণ পর্যন্ত সবাই ভোজন রসিক। আর তাই খাবারে বেশি তেল, বেশি মসলা যুক্ত খাবার খেয়ে থাকি যার ফলে আমাদের সাধারণত অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়। অম্বলের সমস্যা হলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। যেমন -
  • পেট ভার হয়ে থাকা
  • মুখ টক হয়ে যাওয়া
  • পেট ও বুকের মাঝে জ্বালা অনুভুত হওয়া।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে ব্যথাঃ

আমরা জানি আমাদের শরীরের অনেক রকমের ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর এ ব্যাকটেরিয়া গুলো আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে কিন্তু বাইরে থেকে যদি কোন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তখন পরিপাকতন্ত্রের স্বাভাবিক খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। ফলে আমাদের শরীরে অনেক রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া থাকায় বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন-
  • বমি বমি ভাব
  • বমি হওয়া
  • পেটের যন্ত্রণা ও খিচুনি
  • জ্বর
  • পাতলা পায়খানা ইত্যাদি উপসর্গগুলো দেখা দেয়।
এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ও অন্যান্য ঔষধ খাওয়া উচিত। কিন্তু অতিরিক্ত পাতলা পায়খানার ফলে শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে আমাদেরকে ওর স্যালাইন খাওয়া জরুরি । তখন আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে বাড়িতেই ওর স্যালাইন তৈরি করে খেতে পারি। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে পারি।

তলপেটে ব্যথার কারণ

প্রত্যেকটা মানুষের বিভিন্ন কারণে তাদের পেটে ব্যথা হয়ে থাকে তার মধ্যে-
  • লিভার ক্যান্সারের ব্যথা
  • ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম
  • ডেমোস প্রোটনের ব্যথা
  • মূত্রনালীতে সংক্রমনের জন্য তলপেটে ব্যথা
  • পেরিটোনাইটিস
  • হার্নিয়া
  • কিডনিতে পাথর
  • অন্ত্রের ব্যথা
  • মহিলাদের মাসিকের জন্য ক্রাম্প
  • অন্ত্রের প্রদাহ জনিত সমস্যা
  • কোলন ক্যান্সার
  • জরায়ুর ক্যান্সার ওভারনিয়ান ক্যান্সার
  • এক টপিক গর্ভাবস্থা
  • ওভারিয়ান সিস্ট

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়


পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় জানার আগে আমরা প্রথমে জেনে নিই যে, পিরিয়ড কাকে বলে?
পিরিয়ড হচ্ছে প্রতি চন্দ্র মাস পর পর হরমোনের প্রভাব মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তন আসে এবং রক্ত  মিশ্রিত অংশ জনি পথ হয়ে বের হয়ে আসাকে মাসিক বা  ঋতুচক্র বলে। 
এই পিরিয়ড নারীদের জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। পিরিয়ড নারীদের গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত করে। এই পিরিয়ড চলাকালীন কিংবা মাসিক চলাকালীন সময়ে নারীদের পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, হাত পা জ্বালাপোড়া করা, কোমর ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথা কমাতে আমাদের যা করণীয়ঃ

আদার রসঃ পেটের ব্যথা কমাতে আদার রস বেশ উপকারী। এ আদার রস চায়ের সাথে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। আদার সঙ্গে মধু, চিনি গরম পানিতে মিশিয়ে তিন চারদিন খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

গরম পানির সেঁকঃ গরম পানি দিয়ে সেঁক করলে পিরিয়ডের সময় বেশ উপকার পাওয়া যায়। গরম পানি পেটে সেঁক দেওয়া যায় এবং যদি গরম পানি দিয়ে গোসল করা যায় তাহলে পেটের ব্যথা অনেকটা কম হয়।

পেঁপেঃ  কথায় বলে বাড়ির পাশে পেঁপে গাছ লাগাও বাড়ির পাশের ডাক্তার তাড়াও । আমরা জানি পেঁপে প্রত্যেকটা রোগের একটা মহা ওষুধ। তাই পিরিয়ডের সময় যদি পেঁপে খায় তাহলে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপে পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিয়মিত কাচাঁ পেপে খাওয়া।

পানীয় জাতীয় খাবারঃ  প্রচুর পরিমাণে পানীয় জাতীয় খাবার খেলে শরীরের পানি শূন্যতা দূর হয় এবং পিরিয়ডের ব্যথাটা কম অনুভূত হয়। তাই পিরিয়ডের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি ও পানীয় জাতীয় খাবার খাওয়া।

পেটের ব্যাথা কমানোর ঘরোয়া উপায়

পেটের ব্যথা প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলেন, পেট ব্যথা হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।
যেমন গ্যাস, এসিডিসি ,বদহজম, ব্যাকটেরিয়াল বা ভাইরাস জনিত কোন ইনফেকশন থেকে সমস্যা হতে পারে। গ্যাস বা বড় ধরনের সমস্যা অনেক সময় দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হয় কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার কারণে যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তা সহজে দূর করা যায় না তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।


বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন আমাদের খারাপ খাদ্য অভ্যাস জীবনযাত্রার কারণে এই সমস্যা আরো মারাত্তক আকার ধারণ করে বিশেষ করে বাইরে খাওয়ার অভ্যাস এই সমস্যা আরো বেশি সৃষ্টি করছে।
তাই আমাদের সবাইকে এই পেট ব্যথা বিষয় নিয়ে সচেতন হতে হবে, যাতে করে ভবিষ্যৎ জীবন আমাদের এই সমস্যা থেকে আমরা সবাই মুক্ত থাকতে পারি।
পেট ব্যথা বড় একটা সমস্যা না হলেও বিরক্তিকর একটা বিষয় যা আমাদের অবহেলা করা যাবে না ,বরং বেছে নিতে হবে এর সমাধানের উপায়। আমরা জানি ব্যাথা নাশক ঔষধ আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই খুব বেশি জরুরী না হলে আমরা ব্যাথা নাশক ঔষধ একেবারে খাব না।

এক্ষেত্রে আমরা পেটের ব্যথা নিরাময়ের জন্য প্রাকৃতিক কিছু সমাধান করতে পারি। পেটের ব্যথা দূর করা যায় তার প্রাকৃতিক কিছু সমাধান আমরা এখন আলোচনা করব। আসুন জেনে নেওয়া যাক যে আমরা কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে পেটের ব্যথা দূর করতে পারি।

আদা চা: আদা চা খেলে পেটের ব্যথা কমতে পারে আমরা রান্না করে কাচা কিংবা চায়ের মাধ্যমে আদা খেয়ে আমাদের পেটের ব্যথা কমাতে পারি।

ক্যামোমিল চা: ক্যামোমিল চা বদহজম, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব এরকম অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। ক্যামোমিল সম্পর্কে আমাদের অনেকেই জানা না থাকলেও তার চায়ের যে উপকারিতা রয়েছে সেটা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি। ক্যামোমিল চা এর উপর আমরা ভরসা রাখতে পারি।
লেবু চাঃ লেবু চা খেতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি শুধু তাই না লেবু চা খেলে আমাদের পেটের ব্যথা অনেকটাই কমে যায়। তাই আমরা চায়ের সাথে যদি লেবু খায় তাহলে আমাদের পেট ব্যথা কম হবে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা মধু মিশিয়েও এই চা খেতে পারি।

পিপারমেন্ট চাঃ পিপারমেন্ট চা এমন একটি চা যা খেলে পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়রিয়া হওয়া মতো অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই আমরা পেট ব্যথা কমাতে প্রিপারমেন্ট চা খেতে পারি। তাতে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়।

মসলা দইঃ মসলা দই খেতে আমরা অনেকেই পছন্দ করি। কিন্তু দয়ের যে একটা ভালো গুণ আছে সেটা আমরা অনেকেই জানিনা, তা হচ্ছে দই খেলে পেটের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য দূর হয় এবং পেট ব্যথা কমে যায়। দই স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যা খেলে পেট ব্যথা কমে যায় এবং সঙ্গে হজমের সমস্যা সমাধান করে থাকে। 

এক কাপ ঠান্ডা দই সামান্য জিরা গুড়া সামান্য লবণ এই উপাদানগুলো নিয়ে ভালোভাবে ফেটিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় এমন একটি মসলা যুক্ত খাবার। আমরা নিয়মিত খেলে আমাদের পেটের যাবতীয় সমস্যা থেকে ভালো থাকতে পারি।

কাঁচা কলাঃ কাঁচা কলা আমরা অনেকেই রান্না করে খেতে পছন্দ করি। আবার অনেকেই আমরা জানি কাঁচা কলার অনেক উপকারিতা। কিন্তু কাঁচা কলার সিদ্ধ করে খেলে পেটের ব্যথা বা প্রদাহ অনেকটাই কমিয়ে দেয়। কাঁচা কলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি সিক্স পটাশিয়াম। ফলে কাঁচা কলার মিনারেল শরীরের কোন পেশিতে টান লাগলে বা ব্যথা হলে সেটা কমাতে অনেকটা সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত পানি পানঃ  আমাদের শরীরকে ভালো রাখার জন্য প্রচুর পরিমাণে আমাদেরকে পানি পান করা প্রয়োজন। আমরা জানি পানির অপর নাম হচ্ছে জীবন। কিন্তু বেশি বেশি করে পানি পান করলে শরীরে অনেকটা টক্সিন বেরিয়ে আসে। ফলে আমাদের পেটে যে ব্যথা থাকে সে ব্যথাটা আমরা সহজে দূর করতে পারি। তাই আমাদের উচিত পরিমান মত পানি পান করা।

হাঁটাহাঁটি করাঃ আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সুন্দর রাখতে হাটাহাটি প্রত্যেকটা মানুষের করা উচিত। হাঁটাহাঁটি করলে শরীরে ঘাম হয় সেখান থেকে আমাদের শরীরে দূষিত পদার্থ গুলো বেরিয়ে আসে। শুধু তাই নয় নিয়মিত হাঁটার ফলে পেট ব্যথার থাকলে সেটাও অনেকটাই কমে যায়। এজন্য আমাদের প্রত্যেকের নিয়মিত হাটাহাটি করা প্রয়োজন।

ভাতঃ  ভাত আমরা শুধু পেট ভরানোর জন্য খাই না। ভাতে কোন মসলা বা লবণ থাকে না তাই আমরা পেট ব্যথা কমানোর জন্য নরম করে ভাত খেতে পারি। এবং সঙ্গে একটু হালকা ও পাতলা জাতীয় কিছু খেলে পেট ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

পুদিনা পাতাঃ পুদিনা পাতায় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খেলে পেটের ব্যথা, বমি বমি ভাব প্রাকৃতিক ভাবে সমাধানে সহায়তা করে। ফলে পেটের ব্যথা অনেকটা কমে যেতে পারে।

টোস্ট বিস্কুটঃ আমরা অনেকেই টোস্ট বিস্কুট খুব মজা করে খায়। টোস্ট বিস্কুটের যে একটা উপকারিতা আছে সেটা কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা তা হচ্ছে টোস্ট বিস্কুট খেলে পেটের ব্যথা কমতে সহায়তা করে। টোস্ট বিস্কুটে তেমন কোন তেল থাকে না ,তাছাড়া একটু পোড়া টোস্ট বিস্কুট বমি বমি ভাব কমাতে সহায়তা করে।

মৌরি চাঃ আমরা অনেকেই জানি মৌরি চা আমাদের জন্য অনেক উপকারী। মৌরি চা খেলে পেটের জ্বালা ভাব কমতে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। মৌরি চা তৈরি করতে প্রয়োজন এক কাপ গরম পানি, এক চা চামচ চা, এক চা চামচ মুড়ি এবং দুটি তুলসী পাতা এগুলো উপাদান একসঙ্গে নিয়ে ফুটন্ত পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। চিনি ছাড়া খেলে সবচেয়ে উপকার বেশি পাওয়া যায়।

দ্রুত পেট ব্যাথা কমানোর উপায়

পেট ব্যথা সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে। একটা হচ্ছে সাধারণত ব্যথা, অন্যটি হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা। যদি সাধারন ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে সাধারণত দুই-একদিনের মধ্যেই ব্যথাটা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। আর যদি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হয় তাহলে আমাদের অবশ্যই একজন ডাক্তার বাবুর পরামর্শ নেওয়া উচিত। তিনি তার সবকিছু তথ্য দেখে শুনে কি চিকিৎসা দিবে সেটা তিনি ঠিক করে দিবেন।

পেট ব্যথা চিকিৎসা নির্ভর করে তার রোগ নির্ণয়ের উপরে। যদি সাধারণ ব্যাথা হয়ে থাকে তাহলে তার ওষুধ খেলে সাধারণত দু-একদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।
পেট ব্যথা বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে তার জন্য তার চিকিৎসা বিভিন্ন রকম হয়। যেমন ধরুন, শরীর থেকে যদি তরল পদার্থ বেরিয়ে যায় তাহলে আমাদের ইন্ট্রাভেনাস ফ্লুুয়িড (ড্রিপ) শরীরে প্রবেশ করানোর মাধ্যমে বা বাড়ানোর মাধ্যমে তার চিকিৎসা করা যায় ।

আবার যদি শরীরে ডিহাইড্রেশন বা পাতলা পায়খানা হয় তাহলে ওর স্যালাইন খেলে চলে। আবার যদি শরীরে ফোড়া বা সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
তবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যে উপসর্গ আমাদের পেটে দেখা দিয়েছে তার সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা ।

আমাদের শরীরে যদি ব্যথা দেখা দেয় আর যদি আমরা ঐ মুহূর্তে ডাক্তার না পায় তাহলে আমরা নিম্নের কাজগুলো করতে পারি
  • আরামদায়ক কোন জায়গায় শুয়ে পড়তে পারি।
  • সঠিকভাবে বিশ্রাম নিতে হবে।
  • যদি পাতলা পায়খানা হয় তাহলে সাধারণ পানি পান করা যাবে না।
  • দুধ পান করা যাবে না।
  • মসলাদার বা ভারী কোন খাবার খাওয়া যাবে না।
  • নিজের দেহকে উষ্ণ করে রাখতে হবে বিশেষ করে মাসিকের ব্যথা হলে পরে।
  • হালকা খাবার পরিমাণ মতো খেতে হবে অল্প সময়ের ব্যবধানে।

লেখকের মন্তব্য

পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার সম্পর্কে আমরা জানলাম কিন্তু আমাদের প্রত্যেকের পেটে মারাত্মক বা সাধারণ ব্যথা হতে পারে কিন্তু কোন ব্যথাকে উপেক্ষা করা উচিত নয়। তবে আমাদের শরীরে যদি দীর্ঘস্থায়ী পেটে ব্যথা হয় তবে সাথে সাথে অবশ্যই আমাদেরকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে । সে জন্য আমি বলব যে, পেট ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও  প্রতিকার সম্পর্কে বেশি করে জানলে সমস্ত পেট ব্যথা থেকে ভালো ব্যবস্থা নিতে পারবো। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করব এবং সঠিকভাবে তার চিকিৎসা নেব।

এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করবেন এবং আপনার পরিচিত বন্ধু মহলে শেযার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url