মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায়

মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে আপনি অনেক খোজাখুজি করেছেন কিন্তু এর সঠিক কোন উত্তর পাননি। আজ আমি মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আমি উক্ত বিষয় সহ মুখের অতিরিক্ত তেল ও জ্বালা ভাব দূর করার ৫টি উপায় জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।


এখানে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সহ মুখের অতিরিক্ত তেল ও জ্বালা ভাব দূর করার ৫টি সহজ উপায় বিষয়টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্রঃ  মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায়

.
মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হলো মুখ। মুখ হচ্ছে মানুষের শরীরের একটি সৌন্দর্যের প্রতীক। আর সেই অঙ্গে যদি দাগ পরে তাহলে বিষয়টা কেমন হয়। বিভিন্ন কারণে মুখে দাগ পড়তে পারে। প্রখর রোদ, ধুলো ময়লা ও বিভিন্ন দূষণের কারণে মুখে ত্বকে দেখা দেয় পিগমেন্টেশন সমস্যা। আর এ সমস্যা ব্রণ বা অন্য কোন রোগের কারণেও হতে পারে। আজ আমি  মুখের দাগ দূর করতে ৫টি সহজ উপায় সহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।

 মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায়

মানুষের মুখে অনেক রকমের দাগ দেখা যায়। আর সে দাগ দূর করার অনেক উপায় থাকলেও কিছু সহজ উপায় আছে যা ভালোভাবে কাজ করে না। মুখের ত্বকে দাগ হচ্ছে একটি সাধারন সমস্যা। তবে এই সমস্যা যাতে স্থায়ী না হয় বা বসে না যায় সেজন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় মুখের দাগ ধরা পড়লে এবং তা সহজে দূর করা যায় কিন্তু সেটা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় তাহলে তা সহজে দূর করা সম্ভব হয় না। 


আমরা সবাই চেষ্টা করব প্রাথমিক অবস্থায় দাগগুলো দূর করার। ঘরোয়া উপায়ে আমরা মুখে ত্বকের দাগগুলো দূর করে মুখের ত্বককে উজ্জ্বল করতে পারি। মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ

আলুর ব্যবহারঃ আলু মুখের দাগ দূর করতে, মুখ উজ্জ্বল করতে এবং পোড়া পোড়া ভাব দূর করতে মহা ঔষধের মতো কাজ করে। আলুতে থাকে এক ধরনের ক্যাটকোলেজ নামক উপাদান। আলু কখনো কখনো মেছতার কঠিন দাগও দূর করতে পারে। কিভাবে আলু ব্যবহার করে মুখের দাগ বা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায় সে সম্পর্কে এখন আমরা জানবো।
প্রথমে একটা আলু নিয়ে সেটা পরিস্কার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর আলুর খসা ছড়িয়ে নিতে হবে এবং মোটা করে টুকরো করে নিতে হবে। আলুর টুকরো হালকা ভেজা ত্বকে চক্রাকারে ঘোষতে হবে। মনে রাখতে হবে খুব জোরে যেন ঘোষা না লাগে। এভাবে যদি আমরা একমাস প্রতিদিন দুইবার আলুর পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি তাহলে মুখের দাগ চলে যাবে। সরাসরি মাঠে থেকে যে আলু তোলা হয় সে আলু যদি ব্যবহার করা হয় তাহলে দ্রুত এর কাজ করে।
 
লেবুঃ লেবু মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই একটা কার্যকরী উপাদান। এতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড এবং ভিটামিন সি। এই সাইট্রিক এসিড প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে দারুণ কার্যকরী। মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে পাতি লেবু বেশ কার্যকর। একটি বাটিতে লেবুর রস নিয়ে পরিষ্কার তুলে দিয়ে রসে ভিজিয়ে দাগের উপর লাগাতে হবে। 

যদি ত্বক বেশি সেন্সিটিভ হয় তাহলে তার সাথে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। লেবুর রসের সঙ্গে পরিমাণমত মধু মিশিয়ে নিলেও ভালো কাজ করে। লেবুর রস লাগানোর কমপক্ষে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে যদি আমরা বেশ কিছুদিন ব্যবহার করি তাহলে দেখা যাবে যে মুখে ত্বকের দাগ সহজে দূর হয়ে যাচ্ছে।

কমলালেবুর খোসাঃ কমলালেবুর খোসা মুখের ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকরী। কমলালেবুর খোসায় রয়েছে সাইট্রিক এসিড এবং ভিটামিন সি। ত্বকের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকর। কমলালেবুর খোসা প্রথমে পরিষ্কার করে নিয়ে রোদে শুকিয়ে তা গুড়ো করে স্ক্রাব তৈরি করে নিতে হবে।

এই স্ক্রাব ত্বকে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এই স্ক্রাবের সাথে যদি কিছুটা লেবুর রস, দুধ ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করলে এর কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়। এ মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। মিশ্রণটি যদি দিনে একবার ব্যবহার করে তাহলে ত্বকের দাগ সব দূর হওয়ার সঙ্গে ত্বক কোমল উজ্জ্বল হবে।
 
চন্দনঃ চন্দন এমন একটি উপাদান যা অধিকাংশ কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মানুষের ত্বকে ব্রণ হলে সে দাগ অনেক সময় চলে যায় কিন্তু সঠিক সময় ব্যবস্থা না নিলে তা স্থায়ী হয়ে বসে যেতে পারে। আর তাই এ ধরনের দাগ সব দূর করার জন্য আমরা চন্দন ব্যবহার করতে পারি। চন্দন ব্যবহারে আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে

চন্দন ব্যবহারে মুখে ব্রণ হওয়া প্রতিরোধ করে এবং ত্বকে দাগ থেকে রক্ষা করে। চন্দন ব্যবহারের জন্য প্রথমে আমাদেরকে দুই টেবিল চামচ চন্দনের গুড়া এবং কিছুটা গোলাপজল মিশিয়ে নিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিতে হবে। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে আমরা তা মুখের ত্বকে লাগিয়ে নেব। লাগানোর আধাঘন্টা রেখে তা ধুয়ে ফেলতে হবে।

এভাবে আমাদেরকে সপ্তাহে একবার বা দুইবার ব্যবহার করা যেতে পারে এর বেশি ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে যদি আমরা চন্দনের মিশ্রণটি ব্যবহার করি তাহলে আমাদের মুখের ত্বকের দাগ সব দূর হয়ে যাবে এবং মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

বেসন ও হলুদের মিশ্রনঃ মুখের ত্বক থেকে ব্রণ ও দাগ দূর করতে বেসন ও হলুদের মিশ্রণ করে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এছাড়াও হলুদের সাথে দুধ মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে ব্যবহার করলে ত্বক থেকে দাগ দূর করতে সাহায্য করে। 

মুখের অতিরিক্ত তেল ও জ্বালা ভাব দূর করার ৫টি উপায়

মানুষের স্পর্শকাতর অঙ্গের মধ্যে মুখ হচ্ছে একটি অন্যতম। আর এ মুখমন্ডলের স্পর্শকাতর ত্বকে রোদ লাগলে অনেকের জ্বালা করে। অতিরিক্ত গরমের ফলে আমাদের শরীর যেমন ডিহাইডেট হয়ে পড়ে ফলে আমাদের শরীর শুকিয়ে যায় তেমনি ত্বক পানির অভাবে শুকিয়ে যায়। আর শরীরের এই পানির ঘাটতি পূরণ করার জন্য বেশি বেশি করে পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।


বেশি বেশি পানি পান করার ফলে ত্বকের অনেকটা উপকার হয়। অনেক ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে, মুখের স্পর্শকাতর ত্বকে যদি রোদ লাগে তাহলে অনেকেরই ত্বকে জ্বালা করে। আবার যাদের মুখ বেশি তৈলাক্ত তাদের মুখে ব্রণ অনেক বেশি দেখা দেয়। মুখের অতিরিক্ত তেল, ব্রণ ও জ্বালাভাব দূর করার জন্য আমরা ৫টি সহজ উপায়  নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

টক দই ও পুদিনা পাতার মিশ্রণঃ  গরমে যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয় তাদের জন্য এই উপাদানটি অত্যন্ত কার্যকরী। অতিরিক্ত গরমে আমাদের শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে যায়, ফলে মুখ থেকে সেবাম ক্ষরণের পরিমাণও বেড়ে যায় যার জন্য আমাদের শরীরের রেস বা ব্রণের সমস্যা অনেক বেশি দেখা দেয়। আর এই পুদিনা পাতা সেবামের ক্ষরণ থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। 
টক দই ত্বকের সমতা রক্ষা করতে অতুলনীয়। টক দই ও পুদিনা পাতা মিশ্রণ তৈরি করার নিয়ম- দুই টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে এক মুঠো পুদিনা পাতা বেটে নিয়ে মিশ্রন তৈরী করে নিতে হবে। মিশ্রণটি তৈরী হয়ে গেলে এর মিশ্রণ সমস্ত মুখ মন্ডলে মেখে ২০ মিনিট রাখতে হবে। তার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েক দিন ব্যবহার করলেই আপনার কাঙ্খীত ফলাফল পেয়ে যাবেন।

গ্রিন টি ও মধুর মিশ্রণঃ  আমাদের মুখের ত্বকে ছোট ছোট রন্ধ্রে তেল জমে অনেকেরই মুখে হোয়াইট হেডস হয়।  আর এর কারণে আবার সেখানে অনেকেরই ব্রণ অনেক বেশি দেখা দেয়। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা গ্রিন টি ও মধুর মিশ্রণ খেতে পারি। আমরা সকালে যে গ্রিন টি পান করি। সেখান থেকে প্রথমে দুই টেবিল চামচ আলাদা করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।

তারপর ঠান্ডা হলে তার মধ্যে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে গ্রিন টি ও মধুর মিশ্রণ। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে তুলা ভিজিয়ে সারা মুখে মেখে রাখতে হবে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এভাবে সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করলে ব্রণের দাপট থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করা যায় তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। 

শসা, টমেটো ও মধুর মিশ্রঃ  আমরা দীর্ঘ সময় যদি গরমে বা রৌদ্রে ঘোরাফেরা করি তাহলে আমাদের মুখে ট্যান পড়ে, ফলে মুখ থেকে জেল্লা হারিয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা শসা, টমেটো এবং মধু দিয়ে তৈরি করা মিশ্রন যদি ব্যবহার করি তাহলে আমাদের সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। 

মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য আমাদের প্রথমে কয়েক টুকরো শসা এবং টমেটো ব্লেন্ডারে বেটে নিতে হবে। তার সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে কয়েক ফোঁটা মধু। তাহলে তৈরি হয়ে যাবে আমাদের শসা, টমেটো এবং মধু মিশ্রণ। যেকোনো মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে এই মিশ্রণটি কমপক্ষে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন করলে দেখতে পাবেন আপনার মুখের সমস্ত দাগ, ব্রণ দূর হয়ে যাবে এবং মুখে দেখা দিবে শীতলতার একটা ভাব। 

লেখকের মন্তব্য

মুখ মানুষের সৌন্দর্যের প্রতিক। আর সেই মুখে যদি থাকে দাগ তাহলে কেমন হয় বলুনতো। মুখের দাগকে দূর করতে আমরা কতই কিছু না করছি। তার পরেও যদি মুখ থাকে সুন্দর। তবে আমি মনে করি মুখে যদি দাগ বা ছোবভাব দেখা দেয় তাহলে মুখের দাগ দূর করতে ঘরোয়া ৫টি সহজ উপায় গুলো মেনে চললে খুব সহজে মুখের ত্বককে সুন্দর রাখতে পারবো।

এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে আপনার পরিচিত বন্ধু মহলে শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url