স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন
স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন এই প্রশ্নের উত্তর খুজেছেন কিন্তু এর সঠিক কোন উত্তর আপনি পাননি। আজ আমি স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন এর উত্তর সহ স্মার্ট ফোন এর সুবিধা ও অসুবিধা কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন-স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সময় চোখের ক্ষতি এড়াতে পাঁচটি উপায় সহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
মানুষ প্রতিদিন তার কাজকর্ম সুষ্ঠু সুন্দর ভাবে করে থাকে, কিন্তু সমস্ত লেনদেন খোঁজখবর, বেচা কেনা , সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজন একটি স্মার্ট ফোন । স্মার্ট ফোন ছাড়া আমাদের জীবনকে কল্পনা করতে পারিনা। আর তাই স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন আমরা তা বুঝতে পারছি।
আমরা জানবো র্স্মাটফোন কি, র্স্মাটফোনের সুবিধা ও অসুবিধা সুমহ।
স্মার্ট ফোন কি?
স্মার্ট ফোন হচ্ছে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত শক্তিশালী ও উন্নত হার্ডওয়ার দ্বারা ছোট্ট ডিভাইস, যার মাধ্যমে ইন্টারনেট, অ্যাপ ও সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া এবং ফোন কল দেওয়ার মতো সুযোগ পেয়ে থাকে। আধুনিক বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য সর্বক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় স্মার্টফোন।
বর্তমানে এই মোবাইল ব্যবহার করে কম্পিউটারের মতো যত রকমের কাজ আছে তার প্রত্যেকটি কাজ সাধারণভাবে করা যেতে পারে। বর্তমানে যাবতীয় কাজ খুব সহজে করার জন্য প্রয়োজন হয় আমাদের স্মার্টফোন। এই স্মার্ট ফোন আমাদের জীবনে এনেছে বিরাট পরিবর্তন। স্মার্টফোন ব্যবহারে আমাদের জীবনের যেমন ভালো কিছু বয়ে নিয়ে আসে আবার অনেক খারাপ কিছু পরিলক্ষিত হয়।
স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন এর উত্তর জানার আগে আমাদের জানতে হবে স্মার্ট ফোন ব্যবহারে যেমন অনেক রকম সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধা রয়েছে। এবার আমরা জানবো স্মার্টফোনের সুবিধা সম্পর্কেঃ
স্মার্ট ফোনের সুবিধা ও অসুবিধা কি
স্মার্টফোনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হচ্ছে পৃথিবীর যেকোনো জায়গা হতে দ্রুত সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করা যায়। বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের কারো সাথে কথা বলতে হলে কল দিয়ে অথবা এসএমএস দিয়ে কথা বলা যায়। যেকোনো সাইজের ফাইল মোবাইলের মাধ্যমে শেয়ার করা যায় বিশ্বের যে কোন প্রান্তের যেকোনো কারো সাথে। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ছবি, ভয়েস, ভিডিও কল আদান প্রদান করা যায়।
স্মার্ট ফোনের সুবিধা সমুহঃ
- আপনার হাতে যদি একটি স্মার্ট ফোন থাকে, তবে সেই ফোনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোন দেশের অডিও, ভিডিও দেখতে পারবেন। ভিডিও দেখা, গান শোনা, সিনেমা সহ সকল ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। এখন মানুষ সিনেমা হলে না গিয়ে স্মার্টফোনের মাধ্যমে দেখতে বেশি পছন্দ করে।
- পারস্পারিক দূরত্ব, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং দেখতে না পাওয়ার সমস্যা দূর হয় স্মার্টফোনের মাধ্যমে।
- শিক্ষার্থী গন কোন পরিশ্রম ছাড়াই যে কোন স্থানে বসে শিক্ষা লাভ করতে পারে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে।
- আগে মানুষ একসময় চিঠি পাঠিয়ে সংবাদ আদান-প্রদান করত। কিন্তু বর্তমান সময়ে মোবাইলের মাধ্যমে টেক্সট মেসেজ বা ইমেইল করে সহজেই তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।
- মোবাইল এর মাধ্যমে অনলাইন ক্লাশ করা যায়। বর্তমানে ছবি তোলার জন্য বা ভিডিও করার জন্য এখন আলাদা করে কোন ক্যামেরার প্রয়োজন হয় না একটি স্মার্ট ফোন থাকলেই চলে। স্মার্টফোনের এখন সবচেয়ে সুবিধা বড় সুবিধা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা যায়।
- স্মার্ট ফোন আপডেটের কারণে খুব সহজেই এখন পণ্য সামগ্রী বেচাকেনা করা যায়।
স্মার্ট ফোনের অসুবিধাঃ
- প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা যেমন অনেক কাজকে সহজেই করতে পারি, তেমনি এই প্রযুক্তির আমাদের জন্য অনেক দুর্যোগ, ভয়াবহ তা ডেকে নিয়ে এসেছে। একটি স্মার্টফোনের সুবিধা থাকার কারণে অনেকেই মোবাইল ফোনের উপর বেশি আসক্ত হয়ে পড়ে যার ফলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
- মানুষ সামাজিক খেলাধুলা ফেলে দিয়ে এখন ভিডিও গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
- শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ না দিয়ে তারা এখন ফোনের দিকে বেশি ধাবিত হচ্ছে যার ফলে পড়াশোনায় অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
- স্মার্টফোনের কারণে সব সময় চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ে ফলে সমাজের পরিস্থিতি খারাপ হয়।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে বেশি করে মানুষের মধ্যে জুয়া ও বাজির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
- স্মার্টফোনের ডিসপ্লে থেকে বের হওয়া নীল রস্মি আমাদের চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর অনেকক্ষণ যাবত মোবাইলের দিকে চেয়ে থাকলে বা মোবাইল ব্যবহার করলে এটি আমাদের চোখের জন্য মারাত্মক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
- মোবাইল নেটওয়ার্ক আমাদের দেহের অনেক রোগের মূল কারণ।
স্মার্টফোনের কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা যেগুলো আমরা সর্বদাই ফোন ব্যবহার করে পেয়ে থাকি। স্মার্টফোন ব্যবহৃত যতগুলো সুবিধা অসুবিধা রয়েছে সেগুলো থেকে আমি আপনি খুব সহজে নিজেকে বিরত রাখতে পারি সামান্য একটু চেষ্টার মাধ্যমে। আপনাকে অবশ্যই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে গিয়ে আসক্ত হলে চলবে না কেননা একটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে আপনার জীবনের জন্য।
স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সময় চোখের ক্ষতি এড়াতে পাঁচটি উপায়
তথ্য প্রযুক্তির যুগে স্মার্ট ফোন ছাড়া আমাদের জীবনকে কল্পনা করতে পারিনা। স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন এ বিষয়ে আলোচনা করেছি। স্মার্টফোনের মাধ্যমে আমরা কথা বলার পাশাপাশি গান শোনা, গেম খেলা, ভিডিও দেখা সহ দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। দীর্ঘক্ষণ স্মার্টফোন পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার জন্য চোখের উপর চাপ পড়ে।
এতে করে শুধু সময় নষ্ট হয় তা নয় চোখের অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারে। আর তাই স্মার্টফোন ব্যবহার করার জন্য আমাদের যথেষ্ট যত্নশীল হতে হবে। যত্নশীল হওয়ার জন্য আমাদের বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হবে। তাহলে আমাদের চোখকে আমরা ভালো রাখতে পারব। চোখকে ভালো রাখার জন্য পাঁচটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ
নীল আলো প্রতিরোধে ফিল্টারঃ আমরা যে স্মার্টফোন ব্যবহার করি তার ফলে ফোন থেকে এক ধরনের নীল আলো প্রতিফলিত হয়। ফলে আমাদের চোখের উপরে এর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ে। যার কারণে খুব তাড়াতাড়ি চোখের অনেক ক্ষতি হয়। তাই আমাদের চোখকে ভালো রাখতে নীল আলোর প্রতিরোধ ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে। নীল আলোর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করতে আমরা চশমা ব্যবহার করতে পারি।
২০-২০- ২০ বেশ নিয়ম অনুসরণ করাঃ আমরা যে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি তার জন্য আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। তার মধ্যে ২০-২০-২০ নামে একটি নিয়ম রয়েছে। মোবাইল ফোন দেখার সময় প্রতি ২০ মিনিট পরপর কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য অন্তত ২০ ফুট দূরের কিছু দেখতে হবে। ফলে আমাদের চোখের ক্ষতি থেকে আমরা সুরক্ষিত থাকতে পারবো বা চোখ আরাম পাবে। এই নিয়মটা স্মার্ট ফোন ব্রভহারের ক্ষেত্রে মেনে চলা আমাদের প্রত্যেকেরই খুব জরুরী।
স্মার্টফোনের পর্দার উজ্জ্বলতার সামঞ্জস্যঃ আমরা যখন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করি তখন আমাদের প্রত্যেকেরই মনে রাখা উচিত যে, স্মার্টফোনের বেশি উজ্জ্বল আলো কিংবা একেবারে অনজ্জ্বল আলো চোখের জন্য ভালো নয়। তাই আমাদের চোখের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য এমন আলো সেট করে রাখা যাতে করে দেখতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এর জন্য আমরা ফোনের যে সেটিং রয়েছে সেখান থেকে আমরা এর উজ্জ্বল আলো সামঞ্জস্য রেখে ভালো সেটিং করতে পারি।
ফোন দেখতে চোখের পলক ফেলাঃ আমরা সাধারণত কোন কিছু দেখতে স্বাভাবিকভাবে চোখের পলক ফেলে থাকি। কিন্তু যখন আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফোনে কোন কিছু ভিডিও দেখি তখন আমরা নিয়মিত ভাবে ফেলি না। ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
ফোন ব্যবহারের সময় প্রতি আধা ঘণ্টায় ১০ থেকে ২০ বার কমপক্ষে এক সেকেন্ড সময় ধরে পলক ফেলতে হবে। এর ফলে চোখের উপরে কোন চাপ পড়বে না এবং আমাদের চোখটা সুরক্ষিত থাকবে। চোখকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনে আমরা কিছু সময় পর পর চোখে পানি ঝাপটা দিতে পারি।
স্মার্টফোন নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখে ব্যবহার করাঃ আমরা স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় অনেকেই খুব কাছে থেকে ব্যবহার করে থাকি এতে করে ছবি বা ভিডিও ভালোভাবে দেখা গেলও চোখের উপরে বিরূপ প্রভাব পড়ে ফলে চোখে অনেক ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই আমাদের উচিত ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি দূরে রেখে স্মার্টফোন ব্যবহার করা এতে করে আমাদের চোখ ভালো থাকবে।
স্মার্ট ফোন ব্যবহারের সময় আমরা যদি উপরোক্ত পাঁচটি নিয়ম মেনে চলি তাহলে আমাদের চোখের ক্ষতি থেকে আমরা সুরক্ষিত থাকবো।
লেখকের মন্তব্য
আমরা কম বেশি সকলেই স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকি কিন্তু এই স্মার্টফোন কি এ বিষয় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানিনা, আর আপনি যেন এ বিষয়ে পরিপূর্ণ তথ্য জানেন এবং স্মার্টফোন সম্পর্কে কিছু বাক্য বলতে পারেন সেজন্য আজকের পোস্টটি লেখা হয়েছে। স্মার্ট ফোন কেন আমাদের প্রয়োজন এই বিষয় নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। একটি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে একদিকে আমরা যেমন যোগাযোগ করতে পারি ঠিক অনুরূপভাবে আমরা যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতেও পারি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে মানুষ সারাদিন নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ফেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দিচ্ছে অনেকে, এর কারণে সাধারণ জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
মোবাইল ফোনের যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে তেমনি অনেক অসুবিধা রয়েছে প্রযুক্তির সুবিধা এবং ভালো দিকগুলো গ্রহণ করে ,খারাপ দিকগুলো বর্জন করতে হবে তবে আমাদের সমাজ, দেশ ও পৃথিবীর সব ভালো থাকবে।
এতক্ষণ আমার আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমার ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমার ওয়েবসাইটে নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। আমার এ লেখাটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে আপনার পরিচিত বন্ধু মহলে শেয়ার করে দিবেন।
aminulit নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url